নতুন মানচিত্র জাতিসংঘ ও গুগলকে পাঠাচ্ছে নেপাল

নয়াদিল্লির আপত্তিকে পাত্তা না দিয়ে নেপাল পার্লামেন্টে নতুন মানচিত্রের বিল  অনুমোদন হয়েছে জুনের মাঝামাঝিতে। এ বার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে সেই মানচিত্র নিয়ে জাতিসংঘে যাচ্ছে কে পি শর্মা ওলির সরকার। প্রায় ৪০০ বর্গ কিলোমিটার ভারতীয় ভূখণ্ড নেপালে জুড়ে নিয়ে তৈরি নয়া মানচিত্রের বিষয়ে অবহিত করা হবে ভারত সরকার এমনকি, গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানকেও।

নেপালের ভূমি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী পদ্ম আরিয়াল রোববার সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে বলেছেন, ‘আমরা কালাপানি, লিপুলেখ, লিম্পিয়াধুর-সহ সংশোধিত মানচিত্র ভারতসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন সদস্যরাষ্ট্র ও সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সংগঠনের কাছে পাঠাব। আগস্ট মাসের মাঝামাঝিতে এই প্রক্রিয়া শেষ হবে।’

নেপাল সরকারের জরিপ দফতর থেকে ইতিমধ্যেই সংশোধিত মানচিত্রের ৪,০০০ ইংরেজি কপি ছাপানো হচ্ছে। সেগুলি জাতিসংঘ ও গুগলসহ নানা আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে পাঠানো হবে। নেপাল জরিপ দফতর জানাচ্ছে, স্থানীয় ভাষায় মুদ্রিত ২৫ হাজার নয়া মানচিত্র ইতিমধ্যেই নানা সরকারি কার্যালয়ে বিলি করা শুরু হয়েছে। নেপালি জনতাকে অবশ্য নতুন এই মানচিত্র পেতে ৫০ টাকা খরচ করতে হবে।

তিব্বতের কৈলাস ও মানস সরোবর যেতে প্রাচীনকাল থেকেই লিপুলেখ গিরিপথ ব্যবহার করে আসছেন ভারতীয় তীর্থযাত্রীরা। প্রতি বছর জুন থেকে অক্টোবরে গিরিপথের অদূরে চীন অধিকৃত তিব্বত এবং নেপালের গ্রামগুলির বাসিন্দারা স্থানীয় পণ্য বিক্রির উদ্দেশ্যে এখানে আসেন। সম্প্রতি ধরচুলা থেকে লিপুলেখ পর্যন্ত প্রায় ৮০ কিলোমিটার রাস্তা বানিয়েছে ভারত। গত ৮ মে মাসে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সেই রাস্তা উদ্বোধন করার পরেই কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল নেপাল।

৩১ মে নেপালের আইনমন্ত্রী শিবমায়া তুম্বাহাম্পি উত্তরাখণ্ডের কালাপানি, লিপুলেখ, লিম্পিয়াধুরা জুড়ে তৈরি নয়া মানচিত্রের খসড়া পেশ করেছিলেন। ১৩ জুন নেপাল পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ, প্রতিনিধি সভা (হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ) এবং ১৮ জুন উচ্চকক্ষ, রাষ্ট্রীয় সভা (ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি)-র অধিবেশনে সর্বসম্মতিতে মানচিত্রের খসড়া অনুমোদন করে সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ হয়েছিল।

তবে নয়াদিল্লির আপত্তি খারিজ করে ওলি সরকারের এই নতুন মানচিত্র তৈরি করার পিছনে চীনের উস্কানি রয়েছে বলে মনে করে থাকে মোদি সরকার। এ নিয়ে তারা নেপাল সরকারের কাছে নিজের অসন্তোষের কথা জানিয়েছে ভারত। তবে তাদের প্রতিবাদ আমলে নেয়নি নেপাল। সম্প্রতি নেপালের নতুন মানচিত্র জাতিসংঘ ও এর সদস্য দেশগুলোর কাছে পাঠানোর  এই সিদ্ধান্ত সে কথাই প্রমাণ করে।

ওমেন্স নিউজ ডেস্ক/