মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে তরুণী চিকিৎসকের আত্মহত্যা!

বাবার সাথে রাগ করে মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তরুণ চিকিৎসক ও ব্লগার ডক্টর সাইদা মাহা শাহ। জানা যায়, ২৫ বছরের ওই তরুণী বাবার সাথে রাগ করে নিজের মাথায় গুলি চালিয়ে দেন। পরে হাসপাতালে নেয়ার কয়েক ঘণ্টা পর তিনি মারা যান।

এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের করাচি শহরে।

জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার কয়েক ঘণ্টা পরই তার মৃত্যুর খবর জানা যায়। তার পরিবারের লোকজন বলছেন, ঘটনার দিন বাবার সাথে বাকবিতণ্ডা হয় ডক্টর সাইদা মাহা শাহের। এরপর তিনি নিজের ওয়াশরুমে ঢুকে নিজের মাথায় গুলি চালিয়ে দেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকেে উদ্ধার করে করাচির জিন্নাহ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই রাতেই তিন মারা যান।

ডক্টর সাইদা করাচি শহরের ক্লিনটন এলাকার বেসরকারি সাউথ সিটি হাসপাতালে কাজ করতেন। তিনি করাচিতে তার বাবা সৈয়দ আসিফ আলী শাহের সঙ্গেই থাকতেন। চিকিৎসার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমেও সক্রিয় ছিলেন। তিনি ফ্যাশনের ওপর নিয়মিত ব্লগ লিখতেন। ইনস্টাগ্রামে তার ফলোয়ার সংখ্যা কয়েক হাজার। মারা যাওয়ার দিনও তিনি ইনস্টাগ্রামে তার শেষ পোস্টটি আপ করেছিলেন।

তার পরিবারের বরাত দিয়ে স্থানীয় পুলিশ জানাচ্ছে, মঙ্গলবার রাতে (১৮ আগস্ট) চিকিৎসক সাইদা নিজের ওয়াশরুমে গিয়ে আত্মহত্যা করেন।

তবে তার আত্মহত্যার কথা বিশ্বাস করতে চাইছেন না তার পরিচিতজনরা। এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে স্থানীয় নিউজ পোর্টালগুলো। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট বলছে, তার মাথার পিছন দিকে বুলেট লেগেছে। কিন্তু আত্মহত্যার ক্ষেত্রে তো এমনটা হওয়ার কথা না। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল ও খালি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এই আগ্নেয়াস্ত্রের মালিক কে তা এখনও জানা যায়নি।

পাকিস্তানের স্থানীয় নিউজ পোর্টালগুলো আরও জানাচ্ছে, সম্প্রতি বাবা-মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিলেন এই তরুণী।

এদিকে ডা. সাইদার বাবা-মা বলছেন, তাদের মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তাই এ নিয়ে তারা আর কোনও তদন্ত করার প্রয়োজন দেখছেন না। কিন্তু স্থানীয় সংবাদ ও নেটিজনেরা এই প্রতিভাময়ী নারীর রহস্যময় মৃত্যু নিয়ে আরও তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। কেননা তারা মনে করছেন, আত্মহত্যা নয়, তাকে হত্যা করা হয়েছে।

পাকিস্তানের মতো দেশে যেখানে হরহামেশাই অনার কিলিংয়ের নামে নারীদের হত্যা করা হচ্ছে, সেখানে ডা. সাইদার হত্যার সম্ভবানাটিও উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না।

অপূর্ব সুন্দরী সাইদা যে কেবল একজন চিকিৎসক ছিলেন তাই নয়, তিনি ছিলেন একজন ফ্যাশন সচেতন নারী। ফ্যাশনের ওপর তিনি নিয়মিত সামাজিক মাধ্যমে ব্লগ লিখতেন। আর এসব ব্লগের পাঠকও ছিল প্রচুর। তাই তো ইনস্টাগ্রামে তার ফলোয়ার সংখ্যা এত বেশি। তাছাড়া একজন ফ্যাশন ডিজাইনার হিসাবেও তিনি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। এই সম্ভবনাময় তরুনীর আত্মহত্যার ঘটনায় তাই তো উত্তাল পাকিস্তানের সামাজিক মাধ্যমগুলো।

ওমেন্স নিউজ ডেস্ক/