বিড়াল যেভাবে হাসপাতালের দাড়োয়ান

কথায় বলে, শুঁটকির নায়ে বিড়াল চৌকিদার। তবে এটা কোনও শুঁটকির নৌকা নয়, হাসপাতাল। আর এই হাসপাতালে দিব্যি দাড়োয়ানের চাকরি বাগিয়ে নিয়েছে এক বিড়াল বাবাজি। ভাবছেন কীভাবে সম্ভব হলো? তাহলে বলছি শুনুন।

দেখতে ছোট্টখাটো এই বিড়ালের তো দারুণ তেজ, এর চেয়ে বেশি জেদ। লেজ উঁচিয়ে গোটা হাসপাতাল ঘুরে বেড়ায়। সে একটা দেখার মতো ব্যাপার বটে! তো ঘুরতে ঘুরতে কাউকে পছন্দ হলে মিষ্টি হেসে দিব্যি কোলে উঠে পড়বে, চোখ বুঁজে আদর খাবে। আর অনুহুত কাউকে দেখলেই মোচ নাড়িয়ে তেড়ে মেরে ছুটে যাবে। তাকে তাড়িয়ে তবে ক্ষান্ত হবে সে। এই জেদের বদৌলতে দিব্যি হাসপাতালে নিরাপত্তারক্ষীর চাকরি জুটিয়ে নিয়েছে এই বিড়ালটি। সে এখন গলায় হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীর পরিচয়পত্র ঝুলিয়ে সদর্পে ঘুরে বেড়ায়।

অস্ট্রেলিয়ার এপওয়ার্থ হাসপাতালে গেলেই দেখা যাবে এলউডকে। ভালোবেসে হাসপাতালের কর্মীরাই বাহারি নামটি রেখেছে তার।

তাই বলে একদিনের চেষ্টায় নিরাপত্তারক্ষীর চাকরি পায়নি এলউড। এর জন্য তাকে টানা এক বছর ধরে হাসপাতালে ভিতরে-বাইরে চরকির মতো চক্কর কাটতে হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, টানা এক বছর ধরে নিয়ম করে হাসপাতালে আসত এলউড। হাসপাতালের সামনে ঘুরে বেড়াত। সুযোগ পেলে রিসেপশনে কিংবা ওয়েটিং রুমেও ঢুকে পড়ত। ধীরে ধীরে চিকিৎসক থেকে রোগী এবং রোগীর আত্মীর-পরিজনদের প্রিয় পাত্র হয়ে ওঠে সে। প্রত্যেকেই এলউডের খেয়াল রাখতেন। হাসপাতালের গম্ভীর পরিবেশে সকলের মুখে হাসি ফোটানোর ক্ষমতা রাখে ছোট্ট এই প্রাণীটি। তাকে দেখতে পেলে অসুস্থ রোগীর মন ভাল হয়ে যায়। ওষুধের তিক্ততা এবং ইঞ্জেকশনের ব্যথা অনেকটাই ভুলে যাওয়া যান বেশিরভাগ রোগী।

এক বছর ধরে এভাবে চলার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। আর তারপর? তারপর সর্বসম্মতিতে এলউডকে নিরাপত্তারক্ষীর চাকরিতে নিয়োগ দেয়া হয়।

জুন মাসেই চাকরি পেয়েছিল এলউড। তবে তার পরিচয়পত্রটি তৈরি করতে একটু সময় লেগেছে। এখন তো ওই পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়েই সগর্বে হাসপাতালে ঘুরে বেড়ায় এলউড। পারিশ্রমিক যা পায় তাতেই সন্তুষ্ট সে। মাঝে মধ্যে একটু সুখনিদ্রা উপরি পাওনা। সবমিলিয়ে ভালোই আছে কিন্তু আমাদের বিড়াল দারোয়ান এলউড।

ওমেন্স নিউজ ডেস্ক/