কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ মারা গেছেন

কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ আল-আহমাদ আল-সাবাহ যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। কুয়েতের সরকারি সংবাদমাধ্যম কুয়েত টিভি এ তথ্য জানিয়েছে।

বিবিসি জানায়, সাবাহ’র মৃত্যুতে তার ৮৩ বছর বয়সী সৎ ভাই এবং বর্তমান যুবরাজ শেখ নাওয়াফ আল-আহমেদ নতুন আমিরের দায়িত্ব নেবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

টেলিভিশনে শেখ সাবাহর কার্যালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ আল আহমেদ আল সাবাহর মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে দুঃখিত, শোকাহত। তার মৃত্যু কুয়েতের জনগণ, ইসলামি আরব বিশ্ব এবং বন্ধু দেশগুলোর জনগণের জন্য খুবই দুঃখজনক।’

শেখ সাবাহর মৃত্যুর পর কুয়েতের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে নিয়মিত অনুষ্ঠান বন্ধ করে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত সম্প্রচার শুরু হয়। গত জুলাই থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন কুয়েতের আমির। তখন থেকে তার ভাই ও দেশটির ক্রাউন প্রিন্স শেখ নাওয়াফ আল-আহমেদ আল-সাবাহ সাময়িকভাবে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করছেন।

২০০৬ সালে কুয়েতের তৎকালীন আমির শেখ সাদ আল-আবদুল্লাহর পদত্যাগের পর জানুয়ারিতে ক্ষমতায় এসেছিলেন শেখ সাবাহ আল-আহমেদ আল-সাবাহ। এর আগে প্রায় ৫০ বছর ধরে দেশটির পররাষ্ট্র নীতি তদারক করেছেন তিনি। ১৯২৯ সালে জন্মগ্রহণ করা শেখ সাবাহকে আধুনিক কুয়েতের পররাষ্ট্রনীতির স্থপতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।

তিনি কুয়েতের আরেক সাবেক আমির শেখ জাবের আল-আহমেদ আল-জাবের আল-সাবাহর অধীনে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এছাড়া ১৯৬৩ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত এবং ১৯৯২ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছিলেন শেখ সাবাহ।

তাছাড়া, আঞ্চলিক নানা বিরোধ নিস্পত্তিতেও মধ্যস্ততাকারীর ভূমিকা পালন করেছিলেন শেখ সাবাহ আল-আহমেদ আল-সাবাহ।সম্প্রতি সৌদি আরব ও এর মিত্র দেশ এবং কাতারের মধ্যকার কূটনৈতিক অচলবস্থা নিরসনে কাজ করেছিলেন তিনি।

সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ থেকেও কুয়েতকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন সাবাহ। যুদ্ধে জড়ানোর বদলে দেশটিতে মানবিক ত্রাণ সহায়তার জন্য বেশ কিছু দাতা সম্মেলন আয়োজন করেছিলেন কুয়েতের এই আমির।

১৯৯০-৯১ সালে ইরাকের কুয়েত আগ্রাসনকে সমর্থন দেওয়া দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে ভূমিকার জন্য সাবাহ-কে বলা হত ‘আরব কূটনীতির ডিন’।

প্রসঙ্গত, গত ২৬০ বছর ধরে কুয়েত শাসন করছে সাবাহ পরিবার।দেশটির রাজনৈতিক বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন আমিরই। পার্লামেন্ট বাতিল করা কিংবা ভেঙে দিয়ে নির্বাচন ডাকার ক্ষমতাও থাকে আমিরের হাতে।

বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম তেলের ভান্ডার এবং যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মিত্রদেশ কুয়েত। দেশটির ৪৮ লাখ জনসংখ্যার ৩৪ লাখই বিদেশি।

ওমেন্স নিউজ ডেস্ক/