আব্দুল খালেকের কবিতা ‘রক্তের ধারা’

কবি আব্দুল খালেক

রক্তের ধারা

যে জলে আগুন জ্বলে সেই জলের দীঘি
দেখেছি তোমার দু'চোখে। অকস্মাৎ শান্ত
ঘনসবুজে মোড়ানো তোমার সরস জমিনে
যখন একের পর এক ঔপনিবেশিক আর
পাক-প্রেতাত্মা রক্তের নেশায় বুদ হয়ে থাকা
বেজন্মারা হিংস্র নখর বসিয়ে দিলো, তখন
তোমার শান্ত নিবিড় জমিন ফুঁড়ে ফিনকি
দিয়ে ওঠা আগুন-জ্বলা চোখের তপ্তজল উত্তপ্ত
রক্তস্রোত হয়ে পাহাড়ি ঢলের মতো আছড়ে
পড়লো সারা বাংলায়-
সমস্ত নদ-নদী, খাল-বিল, হাওড়-বাওড়,
পুকুর-দীঘি, নলকূপ-ট্যাপকল এমন কি
টেবিলের গ্লাসে রাখা খাবার পানিও রক্তাক্ত
হলো, রক্তাক্ত হলো পথ-ঘাট, মাঠ-প্রান্তর,
হাট-বাজার, অফিস-আদালত, ঘর-দুয়ার;
রক্তাক্ত হলো মনুষ্যত্ব। রক্তে রক্তে সয়লাব
হলো মাতৃভূমি।

সম্ভ্রম হারানো কন্যা জায়া জননীর বুকফাটা
আর্তনাদ, নীরব কান্না, হৃদয় বিদীর্ণ করা কষ্ট,
সীমাহীন ক্ষোভ আর জিঘাংসায় যখন উত্তাল
সারাদেশ, তখন ওদেরই কত দোসর শোনালো,
একই ঘাটে বাঘ আর হরিণের জল পানের কেচ্ছা।
কী বিচিত্র এদেশ, দেশের মানুষ! আসলে-
ওরা রক্তের ধারাকে অস্বীকার করে কি করে?

কবি পরিচিতি: কবি আব্দুল খালেকের জন্ম বগুড়া শহরে। আশির দশকে কবিতা দিয়ে লেখালেখির  শুরু হলেও তিনি নিয়মিত নিবন্ধ, প্রবন্ধ এবং শিশুদের নাটক লিখে যাচ্ছেন। বগুড়ার সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে শিশু সংগঠক হিসেবে পরিচিত। সাংবাদিকতার সাথে জড়িত। তিনি শিশু-কিশোর সাহিত্য সাময়িকী 'কুঁড়ি'র সম্পাদক।

ওমেন্স নিউজ ডেস্ক/