এশিয়ায় ঘুষ লেনদেনের শীর্ষে ভারত

প্রতীকী ছবি

এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘুষ লেনদেন হয় ভারতে। কেবল অর্থ নয়, দেশটিতে ঘুষ হিসাবে যৌন সুবিধা প্রদানেরও চল রয়েছে। সম্প্রতি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের এক সমীক্ষা থেকে এমনটাই জানা গেছে। সূত্র ডয়েচে ভেলে।

২০১৯ সালের মার্চ থেকে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এশিয়ার ১৭টি দেশের মোট ২০ হাজার মানুষের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রকাশিত হয়েছে এই প্রতিবেদন। সমীক্ষায় দেখা গেছে, সরকারের মধ্যে দুর্নীতি নিয়ে সবচেয়ে বেশি চিন্তিত এশিয়ার মানুষ। সমীক্ষার অংশগ্রহণকারীদের মোট ৩৮ শতাংশ মনে করেন, গত এক বছরে তাদের দেশে দুর্নীতি বেড়েছে। ২৮ শতাংশের মত, যেমন ছিল তেমনই রয়েছে দুর্নীতির হার। অন্যদিকে দুর্নীতি কমেছে বলে মনে করেন ৩২ শতাংশ ৷

মিয়ানমার, বাংলাদেশ, ফিলিপাইনস, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, নেপাল, মালয়শিয়া, থাইল্যান্ড, মঙ্গোলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চীন, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও তাইওয়ান থেকে মানুষ এই সমীক্ষায় অংশ নেন। তবে এই সমীক্ষায় নেই পাকিস্তানসহ আরো কয়েকটি দেশের তথ্য।

ইন্দোনেশিয়া থেকে সমীক্ষায় যারা অংশ নিয়েছেন, তাদের মোট ৯২ শতাংশ মনে করেন-দেশের সরকারই সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত। এই সংখ্যা ভারতের জন্য ৮৯ শতাংশ এবং বাংলাদেশে ৭২ শতাংশ। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের এক-তৃতীয়াংশের মত, দেশে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত সংসদ সদস্যরা।

দুর্নীতি দমনে সরকারের ভূমিকা নিয়ে খুশি সমীক্ষায় বাংলাদেশ থেকে অংশ নেওয়াদের মধ্যে ৮৭ শতাংশ মানুষ। মাত্র ১১ শতাংশ মনে করেন, সরকার তার কাজে বিফল।

ভারতীয়দের মধ্যে ৬৩ শতাংশ মনে করেন সরকার দুর্নীতি দমনে সফল। ৩৪ শতাংশ এর বিরোধী। মিয়ানমারের নাগরিকদের মধ্যে থেকে সমীক্ষায় অংশ নেন যারা, তাদের ৯৩ শতাংশই সরকারের কাজে খুশি। মাত্র সাত শতাংশের মত, দুর্নীতি দমনে যথেষ্ট সচেষ্ট নয় সরকার।

সমীক্ষা বলছে, প্রায় ৮৪ কোটি মানুষ গত বছরে কোনো না কোনো সরকারি কাজের ক্ষেত্রে ঘুষ দিয়েছেন। ঘুষ লেনদেনে সবার আগে রয়েছে ভারত। দেশটির মোট ৩৯ শতাংশের মত, গত এক বছরে ঘুষ দিয়েছেন তারা। বাংলাদেশ থেকে সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ২৪ শতাংশ জানিয়েছেন তাদের ঘুষ দেবার কথা।

ভারতের অংশগ্রহণকারীদের ১১ শতাংশ মানুষ কখনো না কখনো কোনও কাজ করাতে যৌন সুবিধা দেওয়া বা নেওয়ার পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন। পাশাপাশি, চেনাশোনা বা পরিবারের লোকদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার তালিকাতেও ভারত সবার ওপরে (৪৬ শতাংশের মত)। ১৮ শতাংশ মনে করেন, দেশে ভোটও কেনাবেচা হয়। ৫১ শতাংশের মধ্যে সরকারের প্রতি অনাস্থা রয়েছে।

সমীক্ষার বাংলাদেশি অংশগ্রহণকারীদের ৮২ শতাংশের মত, সাধারণ নাগরিকের প্রতিবাদ দুর্নীতি দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আট শতাংশের মত, নির্বাচনে ভোট কেনাবেচা হয় বাংলাদেশে।

এশিয়াতে ঘুষ লেনদেনে নারীদের তুলনায় পুরুষরাই এগিয়ে। সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে- এশিয়ার সব দেশেই নারীদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে ঘুষ দেবার হার আড়াই গুণ বেশি।

ওমেন্স নিউজ ডেস্ক/