মনিবের অপেক্ষায় হাসপাতালের ফটকে প্রভুভক্ত কুকুরের ৬ দিন

সে এক সামান্য কুকর। কিন্তু তার ভালোবাসা ও বিশ্বস্ততা যেন মানুষকেও হার মানায়। সম্প্রতি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল তার মনিব চেমাল সেনতুর্ক (৬৮)। মোট ছয়দিন হাসপাতালে ছিলেন এই বৃদ্ধ। এই ছয় দিন ধরে হাসপাতালের সামনে থেকে সরেনি সাদা রঙের কুকুরটি। মনিবের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিল কুকুরটি। মনিবকে সঙ্গে নিয়ে তবেই সে বাড়িতে ফিরেছে। কুকুরের এই ভালোবাসা ও  প্রভুভক্তি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোকে ফলাও করে প্রচারিত হয়েছে।

সংবাদ মাধ্যম গালফ নিউজ জানাচ্ছে- গত ১৪ জানুয়ারি মস্তিষ্কের জটিলতা নিয়ে তুরস্কের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় ত্রাবজোন শহরের এক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৬৮ বছর বয়সী চেমাল সেনতুর্ক। অসুস্থ মনিবের অ্যাম্বুলেন্সের পিছু নিয়ে হাসপাতাল অব্দি যায় ‘বনকুক’নামের কুকুরটি। যেহেতু তাকে হাসপাতালে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি তাই তার ঠাঁই হয় হাসপাতাল সংলগ্ন সড়কে।

হাসপাতালের প্রবেশ দ্বারে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতো বাদামি চোখের কুকুরটি। কাউকে কিছু বলতো না, ক্ষতি করারও চেষ্টা করেনি কারো-কেবল দাঁড়িয়ে থাকতো। আসলে সে তার মনিবের ফিরে আসার অপেক্ষায় ছিল। খাওয়া নাই, দাওয়া নাই-একভাবে সে দাঁড়িয়ে থাকতো। কদাচিৎ হাসপাতালের স্টফরা কিছু খাবার ছুড়ে দিলে সেগুলোই খেত সে।

সেনতুর্কের মেয়ে বেশ কয়েকবার তাকে বাড়ি ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তার সাথে যায়নি কুকুরটি। জোর করে নিয়ে গেলেও ফের চলে এসেছে। এভাবে দীর্ঘ ৬ দিন ধরের হাসপাতালের সামনে মনিবের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিল কুকুরটি।

চলতি সপ্তাহে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছে তার মনিব সেনতুর্ক। প্রভুকে দেখে দৌড়ে তার হুইলচেয়ারের কাছে ছুটে এসেছে প্রিয় কুকুর বোনকুক। মনিবকে দেখে সে কি খুশি তার! লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে, লেজ নাড়িয়ে সেই খুশি প্রকাশ করতেও দ্বিধা করেনি সে।

তার সম্পর্কে তার মুনিব সেনতুর্কের ভাষ্য-‘সে আমাদের পরিবারেরই একজন। ধরতে গেলে আমার সন্তানের মতোই। তাই কুকুর নয়, আমরা তাকে মানুষের মতোই মূল্যায়ন করি। তার উপস্থিতি আমাকে সবসময় আনন্দ দেয়।’

ওমেন্স নিউজ ডেস্ক/