আত্মহত্যায় বাধা না দিয়ে সেটি ভিডিও করায় ব্যস্ত পরিবার!

প্রতীকী ছবি

মানুষ কি তার সব মানবিক গুণাবলী হারিয়ে ফেলছে! প্রতিদিন কিছু নিউজ পড়লে তো এমনই মনে হয়। এক গৃহবধূ গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করছেন। তাকে বাঁচানোর চেষ্টা না করে তার আত্মহত্যার ঘটনা ভিডিও করতে ব্যস্ত তার স্বামী ও শ্বশুর-শ্বাশুড়িসহ বাড়ির সব লোকজন। মেয়েটি আত্মহত্যা করার পর তারা সেই ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ারও করেছে যাতে কোনও ফৌজদারি মামলায় পড়তে না হয়।

এই নির্মম ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তর প্রদেশের মজাফফানগরে।

ভিডিওতে দেখা যায় গৃহবধূ কোমল ঘরের ছাদের আংটায় রশি বেঁধে তাতে নিজের মাথা ঢুকিয়ে দিচ্ছেন। এরপর তিনি রশিতে ঝুলে পড়ে আত্মহত্যা করেন। তখন এক পুরুষ কণ্ঠকে বলতে শোনা যায়-‘আপনে আপ লটাক রাহি হে (নিজে নিজেই ফাঁসি দিয়েছে)। ধারণা করা হচ্ছে ওই পুরুষ কণ্ঠটি ছিলো আতত্মঘাতী নারীর শ্বশুরের। মেয়েটি যখন আত্মহত্যা করছে তখন তাকে বাঁচানোর পরিবর্তে ঘরের বাইরে থেকে পুরো প্রক্রিয়াটি ভিডিও করে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। কোমলের আত্মহত্যার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর তারা এটি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে।

এই আত্মহত্যার ঘটনায় ওই নারীর শ্বশুর, শাশুড়ি, স্বামী অশীষ ও দেবরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে আশীষের সাথে বিয়ে হয় কোমলের। বিয়েতে মেয়ে-জামেই আশীষকে নগদ পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দেয় কোমলের পরিবার। কিন্তু এতেও তাদের লোভ কমেনি। গত দু মাস ধরে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার জন্য কোমলকে সমানে চাপ দিচ্ছিলো তারা। যৌতুক না দেয়ায় তারা তার ওপর নানারকম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতে থাকে। এসব অত্যাচার সইতে না পেরে শেষে সবার চোখের সামনে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে কোমল।

এ ঘটনায় কোমলের শ্বশুর ও শ্বশুড়িকে যৌতুক মামলায় গ্রেপ্তার  করেছে পুলিশ। তবে পালিয়ে যাওয়ায় তার  স্বামী ও দেবরকে এখনও আটক করা সম্ভব হয়নি। আত্মহত্যায় প্ররোচণা দেয়া ও এতে বাধা না দেয়ার অপরাধে তাদের কি ধরনের শাস্তি হতে পারে তা অবশ্য জানা যায়নি।

ওমেন্স নিউজ ডেস্ক/