বায়েজিদ হোসেনের কবিতা মহাপ্রলয়

বায়েজিদ হোসেন

মহাপ্রলয়

যে প্রতিবাদী কবির কণ্ঠ রোধ করা হলো,
হেলেন বুলাকের প্রতিবাদী কণ্ঠ স্তব্ধ হয়ে গেল,
কতুপালং, দাবাব, নায়ারুগুল,জাবালিয়ার শরানার্থী শিবিরে
যে শিশুরা মায়ের উদরেই নির্বাক হলো,
তাদের আত্মারা একদিন একত্রিত হবে ৷
পৃথিবীর বহু লেন বিশিষ্ট ইন্টারনেশনাল হাইওয়ে
অবরোধ করে কথা বলার অধিকার চাইবে ৷
কবি খেত থি আবৃত্তি করবেন অমর কবিতাগুলো,
হেলেন বুলাকের গিটার ঝংকার তুলবে গানে,
পৃথিবীর আলো দেখতে না পারা শরাণার্থী শিশুগুলো
একযোগে কেঁদে উঠবে যারা জন্মের সময় কাঁদতে পারেনি,
ইন্টারনেশনাল হাইওয়ের গাড়িগুলো হঠাৎ থেমে যাবে,
যাত্রীরা দাঁড়িয়ে কবিতা, গান আর কান্না শুনবে ৷
ভীড়ের ভেতর থেকে উচ্চারিত হবে আইলানের নাম,
ভীড় ঠেলে সামনে এগিয়ে আসবে আইলানের আত্মা ৷
একটি উঁচু অদৃশ্য মঞ্চের দিকে এগিয়ে যাবে
যেখানে বসে থাকবে,
খেত থি, হেলেন বুলাকসহ কিছু গণ্যমান্য আত্মা ৷
কম্পিত হাতে মাইক্রোফোন তুলে নিবে সে,
তারপর একটি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিবে ৷
বক্তব্যের সারকথা হলো,
"এতোগুলো বছরে আমি সেই খোদাকে দেখতে পাইনি
যে খোদার দোহাই দিয়ে আমাদেরকে মৃত্যুলোকে পাঠানো হয়েছে,
এতোগুলো বছরে যা বুঝেছি তা হলো আমরা ক্ষমতার বলি
অথচ আমাদেরকে খোদার দোহাই দিয়ে হত্যা করা হয়েছে,
এতোগুলো বছরে বুঝতে পেরেছি
মানুষের চেয়ে বড় কোন খোদা নেই ৷"
তারপর আকাশে বিদ্যুৎ চমকাবে, প্রচণ্ড ঝড় উঠবে
সমুদ্রের জলরাশি ফুলে ফেঁপে উঠবে,
মরুভুমির বালিতে ঘুর্ণিবাত উঠবে,
গাছেরা ভেঙে পড়বে মাটিতে,
খনি থেকে হীরে, জহরৎ উদগীরিত হবে,
ভিসুভিয়াস থেকে লাভা আর ছাই উদগীরিত হবে,
পৃথিবী আঁধারে ঢেকে যাবে ৷
আর বিশ্বাসীরা চিৎকার করে বলবে " এটাই মহাপ্রলয়,
ঈসরাফিল নিশ্চয় সিঙ্গায় ফুঁ দিয়েছে ! "
সবাই ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে তবুও মৃত্যুর আগেও তারা মানুষ হবে না ৷

কবি পরিচিতি: বায়েজিদ হোসেন একজন তরুণ লেখক। জন্ম ঝিনাইদহ জেলায় হলেও বর্তমানে বসবাস করছেন গাজীপুরে। খুব অল্প বয়স থেকেই তার কবিতা লেখায় হাতেখড়ি। বিভিন্ন জাতীয় ও অনলাইন পোর্টালে নিয়মিত লিখছেন। কেবল কবিতা নয়, লিখছেন গল্প, উপন্যাসও। তার একাধিক কবিতাগ্রন্থ, উপন্যাস ও গল্পগ্রন্থ প্রকাশের অপেক্ষায় আছে ৷ তিনি তার লেখার মাধ্যমে সমাজের অসঙ্গতি তুলে ধরার চেষ্টা করেন ৷

ওমেন্স নিউজ ডেস্ক/