সব মিলিয়ে ৩৬৫ দিনে এক বছর। এক বছরের মধ্যে কমবেশি ৩০০ দিন ঘুমিয়েই কাটে তার। একবার ঘুমালে ২০-২৫ দিনের আগে ঘুম ভাঙে না ৪২ বছরের পুরখারামের। ভারতের রাজস্থান রাজ্যের এক গ্রামে বাড়ি তার। তার এই গভীর ঘুম আসলে এক বিরল রোগ। ডাক্তারি পরিভাষায় যার নাম অ্যাক্সিস হাইপারসমনিয়া।
পুরখারামের এই রোগ প্রথম ধরা পড়ে ২৩ বছর বয়সে। এরপর সেই থেকে স্বাভাবিক জীবনযাপনের স্বাদ ভুলে গেছেন। একবার ঘুম পেলেই সব শেষ। যেখানে ঘুম পায় সেখানেই শুয়ে পড়েন। এরপর ২০-২৫ দিন কেটে যায় একটানা ঘুমে। এসময় গোসল, খাওয়ানো— সব ঘুমন্ত অবস্থাতেই করিয়ে দিতে হয় বাড়ির লোককে।
চিকিৎসকেরা বলছেন, অ্যাক্সিস হাইপারসনমিয়া আসলে স্নায়ুর রোগ। মস্তিকে টিএনএফ-আলফা নামে এক প্রকার প্রোটিনের মাত্রা ওঠাপড়ার কারণে এই রোগ হয়।
রোগটি ধরা পড়ার পর প্রথম দিকে একটানা ৫ থেকে ৭ দিন ঘুমোতেন পুরখারাম। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে দিন। এখন তো একবার ঘুমালে ২০ থেকে ২৫ দিনের আগে ভাঙানো যায় না সে ঘুম।
ঘুমের কারণে কামাই রোজগারও শিকেয় উঠেছে পুরখারামের। মাসের মধ্যে বড়জোর পাঁচ-ছ’দিন মুদির দোকানটা খোলা রাখতে পারেন তিনি। অনেক সময় দোকানে এসেও খদ্দেররা দেখেন, পুরখারাম ঘুমিয়ে পড়েছেন। তখন বাড়ির লোকজন এসে তাকে ঘরে নিয়ে শুইয়ে দেন। এই ঘুম রোগ সারাতে অনেক ওষুধ খেলেও কোনও লাভ হয়নি। ঘুমিয়ে উঠেও ফের ঘুমঘুম ভাব, দিনভর ক্লান্তি আর মাথাব্যথা।
চিকিৎসকেরা বলছেন, পুরখারামের এই রোগ খুবই বিরল। মাথায় আঘাত লাগলে বা অতীতে মাথায় টিউমার থাকলেও অনেক সময় এই রকম অবস্থা হতে পারে। ডাক্তারি শাস্ত্রে একে মানসিক সমস্যা বলে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। একেবারে গোড়ায় ধরা পড়লে অনেক সময় চিকিৎসায় সারতে পারে রোগটি। তবে পুরখারামের ক্ষেত্রে সে সম্ভাবনা কতটা তা নিশ্চিত করতে পারছেন না চিকিৎসকেরা।
ওমেন্স নিউজ ডেস্ক/