যেভাবে ক্যাটারিং ব্যবসায় সফল হৃদিতা মুন

করোনা মহামারীর সময়ে আমাদের সামাজিক ও আর্থিক সেক্টরে এসেছে বিরাট পরিবর্তন। লকডাউনে দেশের সকল প্রকার মার্কেট বন্ধ থাকার সুযোগে প্রাণ পেয়েছে অনলাইন ব্যবসা যা ই-কমার্স নামেই বেশি পরিচিত। এই ব্যবসার উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে বিপুল সংখ্যক নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ। ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে ব্যবসা চালানো যায় বলে আজকাল অনেক নারী ব্যবসা খাতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন, যা আমাদের দেশে এর আগে দেখা যায়নি। বিশেষ করে নানা ধরনের পোশাক, অর্নামেন্টস ও হোম মেইড ফুডস ব্যবসায় গড়ে উঠেছে নারী উদ্যোক্তাদের একচেটিয়া রাজত্ব। এই নারী উদ্যোক্তাদের একজন হচ্ছেন হৃদিতা মুন। তিনি কাজ করছেন স্বাস্থ্যকর হোমমেইড খাবার নিয়ে। তার পরিচালিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম মুনস কুকিং স্টুডিও (Moon's cooking studio)।

এমন না ঝোঁকের মাথায় তিনি এই ব্যবসায় উড়ে এসে জুড়ে বসেছেন।  লন্ডন সাউথ ব্যাংক ইউনিভার্সিটি থেকে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেসের থেকে এম এস সি ও পি এইচ ডি ডিগ্রি অর্জনকারী মুনের বরাবরই রান্নাবান্না পছন্দ। এটা ওটা রান্না করে প্রিয়জনদের খাওয়ানো ছিলো তার আলাদা প্যাশনস। পাশাপাশি রান্না বিষয়ক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বগলদাবা করেছেন বেশ কিছু পুরস্কার। হৃদিতা মুন প্রান ঝটপট রান্না, ফখরুদ্দিন কিচেন, লা টিং কিচেনের মতো জাতীয় পর্যায়ের রান্না বিষয়ক রিয়্যালিটি  শোতে অংশ নিয়েও হয়েছেন আলোচিত।

দেশের একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির একাউন্ট ম্যানেজার হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন হৃদিতা মুন। করোনাকালে তার দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় বেশ পরিবর্তন ঘটে গেলো। তাকে আর অফিসে যেতে হয় না, বাসায় বসেই অফিস সারেন। আর তখনই তার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ক্যাটারিং নিয়ে কাজ করার সুযোগ এসে যায়। গত বছরের গোড়ার দিকে গড়ে তুলেন নিজের হোমমেইড ফুড ডেলিভারি প্রতিষ্ঠান ‘মুনস কুকিং স্টুডিও।

মুন ও তার ফেসবুক পেইজ

এক বছরেরও বেশি ধরে খাবার সরবরাহ করে ভোক্তাদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে এই ব্যবসা প্রতিষ্টানটি। একই সময়ে ১০ থেকে শুরু করে ১০০ /১৫০ জনের খাবার সাপ্লাই করছে মুনস কুকিং স্টুডিও। জন্মদিন, বউভাত, আকদ, ফ্যামিলি গেট টুগেদারসহ ছোটবড় সব ধরনের অনুষ্টানে খাবার সরবরাহ করছে এই প্রতিষ্ঠান। মাত্র চারজন কর্মীর সহায়তায় নানা ধরনের খাবার তৈরি করছেন মুন। আমাদের এখানে প্রচলিত খাবারের বাইরেও মুনের তৈরি বেশ কিছু খাবার ইতিমধ্যে ভোক্তদের মধ্যে ব্যাপক চাহিদা তৈরি করতে পেরেছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- গুজিয়া পিঠা, সাদা রসগোল্লা, চিকেন বিরিয়ানি, আপেল পাই, গরুর কোপ্তা, চিকেন মমো, বিফ তেহারি ও কাচ্চি বিরিয়ানি। মুনের তৈরি রসগোল্লা আর যশোরের বিখ্যাত জামতলার মিষ্টির চাহিদা ব্যাপক। যদিও করোনার এই সময়ে লোকবলের অভাবে এইসব চাহিদা মেটানো তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।

এখানেই থেমে থাকতে চান না হৃদি মুন। ভবিষ্যতে নিজের এই ব্যবসাকে আরও বড় ও আকর্ষণীয় করে তোলার ইচ্ছা আছে তার। যাতে অনেক বেকার ছেলেমেয়ের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়। আর Moon's cooking studio’র আরও প্রসার হলে চাকরি ছেড়ে পুরোপুরি এই ব্যবসায় নিজেকে নিযুক্ত করতে চান মুন। এছাড়া ভবিষ্যতে ইভেন্ট মেনেজমেন্ট নিয়েও কাজ করার ইচ্ছা আছে তার। করোনাকালীন সঙ্কট কেটে গেলে স্বপ্ন পূরণে আরও তৎপর হবেন এই নারী। মুনস কুকিং স্টুডিও ‘র জন্য ইতিমধ্যে উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের শাহ মখদুম এভিনিউতে একটি অফিস নিয়েছেন। মুন দেশের নারী উদ্যোক্তাদের সবচেয়ে বড় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম উইমেন এন্ড ইকমার্স (উই) এর একজন এক্টিভ সদস্যা।

গুজা পিঠা, চিকেন মোমো, রসগোল্লা, আপেল পাই, কাচ্চি বিরিয়ানি ও চিকেন বিরিয়ানি। মুনের তৈরি এসব খাবারের চাহিদা ব্যাপক

ছোট বড় যে কোন অনুষ্ঠানে খাবারের জন্য  Moon's cooking studi‘র সহায়তা নিতে পারেন। খাবার অর্ডার করতে পারেন তার ফেসবুক গ্রুপে https://www.facebook.com/Moonscookingstudio/ গিয়ে। এছাড়া 01752585756 এই নম্বরে সরাসরি ফোন করেও অর্ডার করতে পারেন।

ওমেন্স নিউজ ডেস্ক/