সৌদিতে বাংলাদেশি গৃহকর্মী আবিরন হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড

নিহত আবিরন বেগম

সৌদি আরবের রিয়াদের ক্রিমিনাল কোর্ট  গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বহুল আলোচিত বাংলাদেশি গৃহকর্মী মোসাঃ আবিরন বেগমের হত্যাকাণ্ডের রায় ঘোষণা করেছে। আদালত এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত আসামিদের মৃত্যুদণ্ডসহ ভিন্ন ভিন্ন শাস্তির আদেশ প্রদান করেছে।

মামলার প্রধান আসামি গৃহকর্ত্রী আয়েশা আল জিজানীর বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত এবং সুনির্দিষ্টভাবে হত্যাকাণ্ড সংঘটনের দায়ে আদালত “কেসাস” (জানের বদলে জান) এর রায় প্রদান করেছে। অন্য দুই আসামির একজন গৃহস্বামী বাসেম সালেমের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডের আলামত ধ্বংস, গৃহকর্মীকে নিজ বাসার বাইরে অবৈধভাবে কাজে পাঠানো এবং তার চিকিৎসার ব্যবস্থা না করার অভিযোগে আদালত ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানাসহ বিভিন্ন মেয়াদে মোট ৩ বছর ২ মাস কারাভোগের আদেশ প্রদান করেছে।

আদালত মামলার আরেক আসামি কিশোর ওয়ালীদ বাসেদ সালেমকে ৭ মাস কিশোর সংশোধনাগার কেন্দ্রে থাকার আদেশ দিয়েছে আদালত।

উল্লেখ্য, রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কল্যাণ উইং এই বিচারকার্য ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে।

প্রসঙ্গত, খুলনার পাইকগাছার বাসিন্দা ছিলেন আবিরন। তিনি ২০১৭ সালে ঢাকার একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন। ২০১৯ সালের ২৪ মার্চ তাকে হত্যা করা হয়। ২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর তার মরদেহ দেশে আনা হয়।

আবিরনকে হত্যার ঘটনায় দালাল রবিউলকে প্রধান আসামি করে ২০১২ সালের মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে বাংলাদেশেও একটি মামলা হয়েছে। মামলার তদন্তভার বর্তমানে সিআইডির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পাশাপাশি এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ক্ষতিপূরণ আদায় এবং অভিযুক্ত নির্যাতনকারীদের আদালতের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করে মানবাধিকার কমিশন। এরপর আবিরনের পরিবারের পক্ষ থেকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিয়ে গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে বিচার শুরু হয়। যার রায় প্রকাশ হয়েছে গত শুক্রবার। সৌদি আরবে বাংলাদেশি কোনো গৃহকর্মী হত্যায় বিচার করার এটি একটি বিরল ঘটনা।

ওমেন্স নিউজ ডেস্ক/