‘আমি একজন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অথবা একজন আবিষ্টাচ্ছন্ন লেখক’

ফিলিস্তিনি লেখক সাহার খালিফেহ

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফিলিস্তিনি লেখক সাহার খালিফেহ’র জন্ম ১৯৪১ সালে, পশ্চিম তীরের নেবলুস শহরে। তার বেড়ে ওঠা ও লেখাপড়া ফিলিস্তিনে। পরে ইংরেজি সাহিত্যে এমএ করেন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তিনি আমেরিকান সাহিত্য ও ওমেন্স স্টাডিজের ওপর ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ইয়েল ইউনিভার্সিটি থেকে। তার প্রকাশিত উপন্যাসের সংখ্যা নয়টি যার বেশিরভাগই ইংরেজি, ফরাসি, জার্মানসহ নানা বিদেশি ভাষায় অনুদিত হয়েছে। তার একাধিক উপন্যাস যুক্তরাষ্ট্রসহ পাশ্চাত্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভূক্ত।  সাহর  খালিফেহ একজন নারীবাদী লেখক হলেও তিনি তার উপন্যাসে ইসরায়েলিদের হাতে নির্যাতীতফিলিস্তিনীদের জীবন সংগ্রামের ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন অত্যন্ত সুনিপুণভাবে।

এই লেখক সাহিত্যে অবদানের জন্য পেয়েছেন নানান আন্তর্জাতিক পুরস্কার। এগুলোর মধ্যে ইতালির আলবের্তো মোরাভিয়া পুরস্কার, স্পেনের কারভেন্টেস অ্যাওয়ার্ড এবং মিশরের নাগিব মাহফুজ পুরস্কার উল্লেখযোগ্য।

গত ১২ আগস্ট লেখক সাহর খালিফেহ একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে সাহিত্য সাময়িকী `ArabLit & ArabLit Quarterly'।  সেখানে লেখক তার সাহিত্যচর্চার ওপর বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। ওমেন্স নিউজের পাঠকদের জন্য সেই সাক্ষাৎকারটি ভাষান্তর করা হলো। এটি অনুবাদ করেছেন  মাহমুদা আকতার

 আপনার প্রথম উপন্যাস প্রকাশিত হয় ১৯৭৫ সালে, তখন আপনার অনুভূতি কেমন ছিলো? একজন উপন্যাসিক হিসাবে নিজেকে অন্যদের চাইলে আলাদা করেন কীভাবে?
সাহার খালিফেহ-একজন লেখক অন্যদের চেয়ে অনেক দিক দিয়েই আলাদা। যখন উপন্যাস লিখতে শুরু করি তখন এতটা পরিচিতি পাবো সেটা কিন্তু আমি কল্পনাও করিনি। যদিও আমি কিশোরীবেলা থেকেই লেখক হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি। তবে সত্যি বলতে কি এখন যে পর্যায়ে আছি-এতটা কিন্তু কখনই ভাবিনি। মানে আমি বুঝাতে চাইছি-আমার বই এতগুলো বিদেশি ভাষায় অনুদিত হবে এবং আমার উপন্যাস দশটা বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হবে-এগুলো আমার কল্পনা করিনি কখনই। একই সঙ্গে এটাও ভাবিনি এতটা সাহসিকতার সঙ্গে আমি সমালোচকদের মুখোমুখি হতে পারবো। যখন আমার প্রথম বই প্রকাশিত হয়, তখন তো আমি নিজের বা লেখালেখির বিষয়ে এতটা স্পষ্ট ছিলাম না। যদিও আমি একজন লেখক, একই সঙ্গে নারীবাদী, পুরোদুস্তুর রাজনীতি সচেতন একজন মানবিক মানুষ।

আপনি একজন নারী লেখক এবং পাশাপাশি একজন ফিলিস্তিনি লেখক। ১৯৭০ দশক থেকে আপনার উপন্যাস প্রকাশিত হওয়ার পর কীভাবে বদলে গেছে আপনার দৃশ্যপট?
সাহার খালিফেহ-অন্যসব নারীবাদী লেখকদের মতো আমার লেখাতেও নারী চরিত্রগুলো খুবই ব্যত্বিত্বসম্পন্ন হয়ে থাকে। কিন্তু যত কিছুই হউক না কেন তারা কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফিলিস্তিনি, অধিকৃত ফিলিস্তিনি। সেটা ব্রিটিশ কিংবা ইসরায়েল-যার দ্বারাই অধিকৃত থাকুক না কেন অবস্থা তো একই। সেই একই রকম নৃশংসতা, একই রকম নিষ্ঠুরতা। দ্রোহ আর বিপ্লবের চিত্রটাও কিন্তু একই রকমের।

আপনার উপন্যাস ইংরেজি, ফরাসি, জার্মানি, ডাচ, হিব্রু, ইতালিয়ান, স্প্যানিস, মালয়ান, নরওয়েজিয়ান, রুশ-সহ বহু ভাষায় অনুদিত হয়েছে। আপনার কি মনে হয় ভিন্ন দেশ ও ভিন্ন সংস্কৃতির লোকজন আপনার লেখার আলাদা কোনও অর্থ বের করছে? কিংবা আপনার সৃষ্টিগুলোকে তারা ভুল বুঝছে কিংবা ভুল ব্যাখ্যা করছে?
সাহার খালিফেহ-আমার এটা কখনই মনে হয় না যে, ভিন্ন সংস্কৃতি হওয়ার কারণে তারা আমার উপন্যাসগুলো ভিন্নভাবে দেখছে বা ব্যাখ্যা করছে। আমি মনে করি পাঠকরা সবসময়ই উপন্যাস পড়ে নিজেদের আনন্দের জন্য। একইসঙ্গে তারা এ থেকে খানিকটা জ্ঞান অর্জন করে এবং ভীষণভাবে উদ্বুদ্ধ হয়। তাছাড়া উপন্যাস তো আর সামাজিক বিজ্ঞান কিংবা ইতিহাসের বই নয় যে, এসব নিয়ে তারা সন্দেহ পোষণ করবে। তারা এবিষয়ে অবগত যে, তারা যে উপন্যাসগুলো পড়ছে তা সত্যের ওপর ভিত্তি করে লেখা কল্পকাহিনী মাত্র। সত্য ঘটনা থেকে উপজাত হলেও এগুলো কিন্তু পুরোপুরি বাস্তব নয়। এমনকি তারা সত্য ঘটনার ওপর নির্ভর করে লেখা কোনও উপন্যাস পড়ার সময় এটাও জানে যে, এটির শতভাগ কখনই সত্যি নয়। তারা লেখকের চোখ দিয়ে ঘটনাগুলো দেখে মাত্র। এজন্যই উপন্যাস লিখে আমি আনন্দ পাই। অন্যান্য উপন্যাসিকদের মতো কোনোও কিছু রচনা করার সময় আমিও পুরোপুরি একটি বিস্তৃর্ন প্রান্তর খুঁজে পাই এবং ওই খোলা জায়গায় আমি বাস্তবতা নিয়ে নিজের ইচ্ছেমতো খেলতে পারি, অথবা বাস্তবতার সাথে মজা করতে পারি, এমনকি চাইলে বাস্তবতাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষাও করতে পারি।

গত ৩০ বছর ধরে আরবি সাহিত্যকর্মগুলো ব্যাপকভাবে অন্যান্য ভাষায় অনুদিত হওয়ায় কোনও পার্থক্য এসেছে কি?
সাহার খালিফেহ-আমি মনে করি কেবল আরবি নয়-অন্যন্য ভাষাতেও অনেক অনুবাদ হচ্ছে। অনুবাদ কর্মের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। যে কারণে আমরা ল্যাটিন আমেরিকা, জাপান, ইরান, ভিয়েতনাম, কোরিয়া এবং অন্যান্য ভাষার সাহিত্য কর্ম পড়তে পারছি। আমি এক্ষত্রে সেই চর্বিত চর্বন পুরনো বাক্যটা ব্যবহার করাটা পছন্দ করছি না। তবে সেটাই বলতে হচ্ছে-‘পৃথিবী এখন ছোট্ট একটা গ্রামে পরিণত হচ্ছে’। আসলেই পৃথিবী অনেক ছোট হয়ে আসছে।

প্রশ্ন-আপনি কেন নিজের জীবন নিয়ে উপন্যাস লিখতে চাইছিলেন?
সাহার খালিফেহ-কারণ আমি গোপনীয়তা প্রকাশ করতে চেয়েছিলাম। আমি একজন নিপীড়িত আরব নারী হিসেবে আমার গোপনীয়তা এবং প্রতিটি উপন্যাসের পিছনের রহস্য প্রকাশ করতে চেয়েছিলাম। আমি শেখাতে চেয়েছিলাম এবং অন্যদের শিখতে দিয়েছিলাম। আমি কিছুই ছিলাম না এবং কিছু হয়ে গেলাম। অন্যরা এটি থেকে শিখতে পারে, বিশেষত নারীরা। এটা কি মূল্যবান কিছু? আমি মনে করি-এটা তেমনই কিছু।

প্রশ্ন-আপনি ‘হুব্বাই আল-আওয়াল’ কখন লিখতে শুরু করেছিলেন। আপনার অন্য উপন্যাসগুলোর চাইতে এটা আলাদা হলো কীভাবে?
সাহার খালিফেহ-‘অব নোবেল অরিজিনস’লেখা শেষ করার পরেই আমি এটি লিখতে শুরু করি। এটা শেষ করতে আমার দুই বছর লেগেছে। আপনি দেখতে পাচ্ছেন, এটি একটি আধা-ঐতিহাসিক উপন্যাস। এটা ঠিক যে চরিত্রগুলোকে বর্তমানে জীবিত অবস্থায় চিত্রিত করা হয়েছে, কিন্তু তাদের স্মৃতি আমাদেরকে আগের সময়ে নিয়ে যায়, যখন মুক্তির সংগ্রাম শুরু হয়েছিল। এটি একটি বহু স্তরবিশিষ্ট উপন্যাস। এটি একই সাথে অতীত এবং বর্তমান নিয়ে কাজ করে। এতে আছে কাল্পনিক চরিত্র এবং বাস্তব চরিত্র, কাল্পনিক ঘটনা এবং বাস্তব ঘটনা। আমি এই উপন্যাস এবং আগেরটি, সেইসাথে পরেরটাতেও এটি করার চেষ্টা করেছি। এটি একটি ট্রিলজি উপন্যাসের অংশ। ট্রিলজিতে, আমি আমাদের অতীতকে ধরার চেষ্টা করেছি যা আমাদের বর্তমানের দিকে নিয়ে যায়। আমি একজন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ লেখক অথবা হয়তো আমি একজন আবিষ্টাচ্ছন্ন লেখক। আমি আচ্ছন্ন রয়েছি একজন অধিকৃত ভূখণ্ডের বাসিন্দা হিসাবে, কেননা আমি তো এখানেই বসবাস করি। আমি দখলের নৃশংসতার সাক্ষী। আমি সেই নৃশংসতার সাক্ষী এবং বেঁচে আছি এবং এখনও সেই নৃশংসতাকে আশ্রয় করেই বেঁচে আছি। আমার চরিত্রগুলি আমি যা অনুভব করি,  আমি যা ভাবি এবং বিশ্বাস করি-তার প্রতিনিধিত্ব করে। অন্যভাবে দেখতে গেলে আমার চরিত্রগুলি কিন্তু আসলে আমি। এই উপন্যাসে হোক বা আগেরটা হোক বা পরেটা হউক আমি তো তাদেরই একজন।  

একটি উপন্যাসের জন্য অনুবাদকের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কী? আপনি কি চলমান কথোপকথনে আছেন বা অনুবাদ প্রক্রিয়ায় আপনার অংশগ্রহণ কেমন?
সাহার খালিফেহ-আমার উপন্যাস ১৫ টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। দুর্ভাগ্যক্রমে, আমার জানা একমাত্র বিদেশি ভাষা হচ্ছে ইংরেজি। স্পষ্টতই, ইংরেজি ছাড়া অন্য কোন অনুবাদ কর্মের জড়িত হওয়া প্রশ্নের বাইরে থাকবে। এমনকি ইংরেজিতে অনুবাদ করার সময়, অনুবাদক শুধুমাত্র নাম বা স্থান বা উদ্ভিদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন যেসব তিনি ইংরেজিতে অনুবাদ করতে অসুবিধা বোধ করেন। অবশ্যই আমি সাহায্য করার চেষ্টা করি। কিন্তু বেশিরভাগ সময় আমিও সঠিক উত্তর দেওয়া কঠিন মনে করি। উদাহরণস্বরূপ, যখন আমাকে ইংরেজিতে একটি নির্দিষ্ট উদ্ভিদ বা ফুলের নাম জিজ্ঞাসা করা হয় তখন আমি কেবল বলি ‘আমি দুঃখিত, আমি জানি না।’ এই ক্ষেত্রে, অনুবাদককে আমার থেকে দূরে একটি সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। এবং আমি এটা মেনে নিয়েছি। আমি স্বীকার করি যে অন্যান্য ভাষায় আমার ক্ষমতা কম। আমি এটাও স্বীকার করি যে অনুবাদ আমার ক্ষেত্র নয়। তাই অন্যান্য অনুবাদকদের সাথে আমার সম্পর্ক সাধারণত অস্পষ্ট। আমি শুধু তাদের নাম জানি। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে, আমি অনুবাদকের সাথে দেখা করি এবং একভাবে তার ঘনিষ্ঠ হই, যেমন আমার ইংরেজিতে অনুবাদক প্রফেসর আইদা বামিয়া এবং কোরিয়ান ভাষায় আমার অনুবাদক প্রফেসর গান। আমি যথেষ্ট ভাগ্যবান যে এই দুজনের সাথে দেখা হয়েছিল, মুখোমুখি হয়েছিলাম এবং মানুষ হিসেবে তাদের সঙ্গ উপভোগ করতে পেরেছিলাম। অন্যথায়, অন্যান্য অনুবাদকদের সাথে আমার সম্পর্ক শুধুমাত্র ব্যবসায়িক। আমি শুধু তাদের নাম জানি।

‘হাব্বি আল-আউয়াল’ উপন্যাসের একটি জটিল কাহিনী রয়েছে যার অনেকগুলি স্তর এবং চরিত্র রয়েছে। আপনি কিভাবে এই উপাদানগুলিতে কাজ করেন? আপনি কি এগুলোর উপর আলাদাভাবে কাজ করেছেন, প্রথমে প্রসঙ্গ তারপর চরিত্র?
সাহার খালিফেহ-আমি সাধারণত প্লট নির্বাচন করে লেখা শুরু করি। প্লট অনুযায়ী, আমি উপন্যাসের চরিত্রগুলি বেছে নিই। যখন আমি আমার চরিত্রগুলি নির্বাচন করি, তখন তারা যেখানেই যায় এবং তাদের সাথে থাকে বা তাদের অনুসরণ করা সহজ হয়ে যায়। আমি যদি তাদের ব্যাকগ্রাউন্ডের সাথে পরিচিত না হই তবে আমি অক্ষর নির্বাচন করি না। আমি তাদের বাস্তব জীবন থেকে নির্বাচন করি। যদি তারা ঐতিহাসিক চরিত্র হয়, আমি তাদের জীবনী খুব ভালভাবে অধ্যয়ন করি এবং তারপর আমার কল্পনাকে বিশদ বিবরণের যত্ন নিতে দেই। এটি ফিকশন লেখার খেলা।

আপনি কোন কোন লেখকদের লেখা পড়তে পছন্দ করেন?
সাহার খালিফেহ-দস্তয়েভস্কি এবং সিমন দ্য ব্যুভার। আমি শৈশব থেকেই তাদের পড়া শুরু করেছিলাম এবং এখনও পড়ছি, আমি কখনও তাদের পড়া থামাইনি। দস্তয়েভস্কির কাছ থেকে আমি শিখেছি কীভাবে চরিত্র তৈরি হয় বা হওয়া উচিত। তারা কীভাবে চলাফেরা করে, তারা কী ভাবছে, তাদের অভ্যন্তরীণ রহস্য, তাদের দ্বন্দ্ব এবং জটিলতা এবং তারা কতটা শক্তিশালী এবং অসহায়। আমি তার বেশিরভাগ কাজ দ্বারা মুগ্ধ, বিশেষ করে ব্রাদার্স কারামাজভ। সিমন দ্য ব্যুভার একজন বড় লেখক এবং দার্শনিক! আপনি কি ম্যান্ডারিনস পড়েছেন? আমি উপন্যাসটি অন্তত পাঁচবার পড়েছি। এবং তার সেকেন্ড সেক্স বই থেকে আমি শিখেছি কিভাবে আমরা নারী হই, মানে আমি কিভাবে অন্য লিঙ্গ হয়ে গেলাম। এই দুই লেখক আমাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিলেন। যদিও আমরা শুধু একজন বা দুইজন বা দশজন লেখক দ্বারা প্রভাবিত নই। আমরা যা পড়ি তার দ্বারাই আমরা প্রভাবিত হই। আমরা এই সত্যটি সম্পর্কে অবগত হই বা না হই- তাতে কোন পার্থক্য নেই। আমরা পড়ি, গ্রাস করি। আমরা যা পড়ি এবং বড় হয়ে তা হজম করি। ঠিক খাবারের মত। খাদ্য ছাড়া যেমন কখনইআমাদের বৃদ্ধি সম্পূর্ণ হয় না, তেমনি পড়া ছাড়া আমরা কখনই লিখি না।

ইংরেজি ভাষায় অনূদিত লেখকের কিছু বিখ্যাত উপন্যাস

ওমেন্স নিউজ সাহিত্য/