মণ্ডপ ঘিরে বর্ণিল উৎসব: অসুর বধের আহ্বানে উদযাপিত অষ্টমী

ঢাকেশ্বরাী পূজামণ্ডপের প্রতিমা

আনজুমান আরা শিল্পী

শারদীয় আবেশ লেগে আছে প্রকৃতি জুড়ে। নীলাকাশ, সাদা মেঘের ভেলা, কাশফুলের সমারোহ। শিউলি ঝরা প্রভাত। ঘাসের পরে শিশির বিন্দু। রাত গভীরে শীত শীত আমেজ। তার মধ্যে পূজামণ্ডপগুলো মুখরিত ঢাকের বাদ্য, উলুধ্বনি আর শঙ্খের আওয়াজে। হিন্দুদের উৎসবের জোয়ার বইছে চারদিকে। মঙ্গলবার থেকেই মন্দিরগুলোতে ঠাকুর দর্শনের জন্য দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে। হাজার হাজার হিন্দু ভক্ত দর্শনার্থী ঢাকেশ্বরী মন্দির, তাঁতীবাজার, জগন্নাথ হল, শাঁখারিবাজার, সিদ্ধেশ্বরী, বনানীসহ রাজধানীর বিভিন্ন মন্দিরে দুর্গাকে দর্শন ও প্রার্থনা করছেন। মুখরিত হয়ে উঠছে প্রতিটি মন্দির প্রাঙ্গণ। মঙ্গলবার মহাসপ্তমী বিহিত থেকেই মূলত উৎসবের জোয়ার নামে পূজায়। আর মাত্র দুটি দিবানিশির প্রহর পেরুলেই উমার কৈলাশ গমন। ‘ঠাকুর থাকবে কতক্ষণ’এই সুর এখন ভক্ত প্রাণে। বুধবার ছিলো শারদীয় দুর্গাপূজার মহাষ্টমী।

এদিন ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পূজাম-পসহ রাজধানীর কয়েকটি পূজামণ্ডপ ঘুরে দুর্গাপূজার চিরাচরিত উৎসবমুখর আমেজ ফিরে আসতে দেখা গেছে। কেন্দ্রীয় পূজামণ্ডপ হিসেবে পরিচিত ঢাকেশ্বরী মেলাঙ্গনের এই পূজামণ্ডপে দিনভর অনেক দর্শনার্থী ও পূজারির আগমন ঘটছে। কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে র‌্যাব-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। ঢাকেশ্বরী মেলাঙ্গনে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল মন্দিরেও ছিল উৎসবের ছোঁয়া। গোপীবাগের রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠের পূজামণ্ডপ, রমনা কালীমন্দির, সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির ছাড়াও হিন্দু অধ্যুষিত পুরান ঢাকার মন্দির, মণ্ডপেও আনন্দমুখর পরিবেশ দেখা গেছে। এবার ঢাকা মহানগরীর ২৩৭টিসহ সারাদেশের ৩২ হাজার ১১২টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

রামকৃষ্ণ মঠে হয়নি কুমারী পূজা
শারদীয় দুর্গোৎসবের  মূল আকর্ষণ কুমারী পূজা। এবার এটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো বুধবার মহাঅষ্টমীর দিনে। কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে গত বছরের মতো এবারও ঢাকা রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে কুমারী পূজা হয়নি। তবে চট্টগ্রাম নগরের পাথরঘাটায় শ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দ ও শান্তনেশ্বরী মাতৃমন্দিরে প্রতিবছরের মতো এবারও অনুষ্ঠিত হয় কুমারী পূজা। কুমারী পূজার জন্য মাতৃভাবের পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে এ বছর কুমারী মায়ের আসনে বসানো হয়েছে ৬ বছর বয়সী প্রীত ধরকে। তিনি সেন্ট স্কলাস্টিকাস স্কুলের কেজি শ্রেণীতে অধ্যয়ন করছেন।

পঞ্জিকানুযায়ী এদিন সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে দুর্গাদেবীর মহাষ্টম্যাদি বিহিত পূজা প্রশস্তা ও মহাঅষ্টমীর ব্রতোবাস শুরু হয়। পুষ্পাঞ্জলি ও প্রসাদ বিতরণ শেষে বেলা ১২টা ৩১ মিনিট থেকে ১টা ১৯ মিনিটের মধ্যে সল্পিব্দ পূজা অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিট থেকে রাত ৮টা ৬ মিনিটের মধ্যে সন্ধিপূজার মধ্য দিয়ে শেষ হয় মহা অষ্টমীর আনুষ্ঠানিকতা। এদিকে মহাঅষ্টমীতে  এরআগে মা দুর্গার বোধনের মধ্য দিয়ে গত সোমবার (১১ অক্টোবর) শুরু হয় বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় দুর্গোৎসব।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার মহাষ্টমীর দিন বুধবার সারা দেশে জুয়েলারি দোকান পূর্ণদিবস বন্ধ ছিলো। এদিকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে মুক্তি পেতে অনেক মণ্ডপ মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। করোনার কারণে বিশেষ সতর্কতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই দর্শনার্থী ও পূজারীদের পূজা উপভোগ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ মণ্ডপ ও মন্দিরে মাস্ক এবং হ্যান্ড সানিটাইজার রাখা হয়েছে। তবে মণ্ডপে প্রবেশ করে অনেককে মাস্ক খুলে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে।  কোথাও কোথাও বেষ্টনীর কড়াকড়ি মেনে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মণ্ডপে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।

সন্ধ্যা হলেই দারুণ আলোঝলমলে হয়ে উঠেছে মন্দির ও মণ্ডপগুলো। সুসজ্জিত মন্ডপে জ্বলছে নানা রঙের মরিচবাতি। প্রধান প্রধান রাস্তায়, গলির মুখে দাঁড়িয়ে আছে সুউচ্চ তোরণ। আশপাশের এলাকায় লোক ঐতিহ্যের পসরা। সব মিলিয়ে বেশ জমজমাট এখন শারদীয় দুর্গোৎসব। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নয় শুধু, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও উৎসবে যোগ দিয়েছেন। ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন আনন্দ। অসাম্প্রদায়িক বাঙালি চেতনার এই উজ্জীবনও লক্ষ্য করার মতো।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের দেয়া তথ্য মতে, এবার সারাদেশে প্রায় ৩২ হাজারের বেশি মন্ডপে পূজা আয়োজন করা হয়েছে। রাজধানী শহরে উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২৩৮টি মন্ডপে। গত সোমবার ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সপ্তমীর দিনে মঙ্গলবার মন্ডপ ও মন্ডপ ঘিরে থাকা এলাকাগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে উৎসবের রঙ। একেক মন্ডপের কাঠামো বিন্যাস পরিসর একেক রকমের। প্রতিমা গড়ার ক্ষেত্রেও আলাদা আলাদা থিম ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে বিভিন্ন মন্ডপ ঘুরে বেড়াচ্ছেন দর্শনার্থীরা। বেশি ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে সন্ধ্যায়। মন্ডপের পরিবেশ এসময় বিশেষ জমজমাট হয়ে উঠছে।

চট্টগ্রামের শ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দ ও শান্তনেশ্বরী মাতৃমন্দিরে অনুষ্ঠিত কুমারী পূজায় মায়ের আসনে বসানো হয়েছে ৬ বছর বয়সী প্রীত ধরকে

পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মন্দিরে আসা অঞ্জনা দত্ত নামের এক তরুণী বলেন, ঢাকেশ্বরী মন্দিরের আলাদা ঐতিহ্য রয়েছে। পারিবারিকভাবেই আমরা এখান থেকে পূূূজা শুরু করি। এখানে এলেই উৎসবটা কেন যেন মনে হয় পরিপূর্ণ হলো। এখান থেকে বের হয়ে অন্য মন্ডপে যাবেন বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চট্টোপাধ্যায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরের আয়োজনটির সঙ্গেও যুক্ত আছেন। তিনি জানান, করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে এর তেমন প্রভাব পড়েনি উৎসবে। বরং অষ্টমী ও নবমী উৎসব আরও জমে উঠবে বলে আশা করছেন তিনি।

ঢাকেশ্বরী মন্দিরের বাইরে এবার তেমন দোকানপাট বসতে দেয়া হয়নি। এরপরও বিচ্ছিন্নভাবে অনেকেই নানা পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন। এখানে ঐতিহ্যবাহী কাঁসান্ডপিতল শিল্পের নিদর্শন। নারিকেলের নাড়ু, মোয়া, বাতাসার মতো বাঙালি ঐতিহ্যের খাবার পাওয়া যাচ্ছে। দুর্গোৎসব উপলক্ষে রাতভর নানা আয়োজন চলছে শাঁখারীবাজারে। সরু গলিতে অনেক মন্ডপ। পথের ওপর মাচার মতো তৈরি করে সেখানে প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছে। শুক্রবার বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচদিনের উৎসব।

বুধবার (১৩ অক্টোবর) অষ্টমীর দিন সকালে প্রতিবছরের মতো এবারো হয়েছে মায়ের চরণে ভক্তদের পুষ্পাঞ্জলির অনুষ্ঠান। রয়েছে সন্ধিপূজা। মহাষ্টমীর মূল আকর্ষণ ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনসহ অন্যান্য স্থানের কুমারীপূজা। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে এবারও রামকৃষ্ণ মিশনে কুমারীপূজা হচ্ছে না।

বৃহস্পতিবার সকালে বিহিত পূজার মাধ্যমে হবে মহানবমী পূজা। আর শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) সকালে দর্পণ বিসর্জনের পর প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।

বুধবার মহাঅষ্টমীতে সকাল থেকেই মণ্ডপ ঘিরে ভক্তদের ভিড় বাড়তে শুরু করে।  মা দুর্গার অনেক রূপের মধ্যে একটি রূপ হলো মহিষাসুরন্ডমর্দিনী। মা দুর্গার এই রূপেই তিনি অসুর নিধন করেছিলেন। দুর্গাপূজার পিছনে বেশ কিছু অসুর বধের কাহিনী রয়েছে। যার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে সন্ধিপূজার। অষ্টমী শেষ হয়ে যখন নবমী তিথি শুরু হয় তখনই সন্ধিপূজা করা হয়। আসলে সন্ধিপূজা হলো সন্ধ্যার প্রতীক। অষ্টমী তিথি শেষ হয়ে যাওয়ার শেষ ২৪ মিনিট এবং নবমী তিথি শুরু হওয়ার প্রথম ২৪ মিনিটকে বলে সন্ধিক্ষণ। এই সময়েই দেবী দুর্গা চ- ও মু- নামে দুই ভয়ঙ্কর অসুরদের নিধন করেছিলেন। এই ঘটনাটিকে স্মরণ করার জন্যই প্রতি বছর অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে এই সন্ধিপূজা করা হয়। সন্ধিপূজার অন্যতম উল্লেখযোগ্য নৈবেদ্য হলো পদ্ম। এই পূজায় দেবীকে ১০৮টি পদ্ম অর্পণ করা হয়, ১০৮টি বেলপাতা এবং ১০৮টি মাটির প্রদীপ জ্বালানো হয়। নৈবেদ্যয় দেওয়া হয় গোটা ফল, জবা ফুল, সাদা চাল, শাড়ি, গহনা এবং সাজন্ডসজ্জার দ্রব্যও থাকে।

এছাড়া মহাষ্টমীতে অনুষ্ঠিত হয় কুমারী পূজা। দেবী পুরাণে কুমারী পূজার সুষ্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনসহ কয়েকটি স্থানে প্রতি বছর কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। তবে গত বছরের মতো এ বছর করোনা সংক্রমণের কারণে হয়নি কুমারী পূজা।

হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় এ ধর্মীয় উৎসব ঘিরে এখন সারাদেশে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। পুরাণ মতে, রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন। বসন্তকালে তিনি এই পূজার আয়োজন করেছিলেন বলে এ পূজাকে বাসন্তী পূজা বলা হয়। কিন্তু রাজা রাবণের হাত থেকে স্ত্রী সীতাকে উদ্ধারের জন্য রাজা দশরথের পুত্র রামচন্দ্র শরৎকালে দুর্গাপূজার আয়োজন করেছিলেন। তাই শরৎকালের এই পূজাকে অকাল বোধনও বলা হয়। বাঙালির হৃদয়ে শরৎকালের দুর্গার অধিষ্ঠান কন্যারূপে। প্রতিবছর বিভিন্ন বাহনে সপরিবারে শ্বশুরবাড়ি কৈলাস থেকে কন্যারূপে দেবী মর্তলোকে আসেন বাপের বাড়ি বেড়াতে। তাই দেবীকে বরণে আয়োজনের কমতি থাকে না।

শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে রবিবার দুপুরে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের নিরাপত্তাব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম। পূজাম-পের নিরাপত্তাব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি। শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে কোনো ঝুঁকি দেখছি না। তবে আশঙ্কার কথাও উড়িয়ে দিচ্ছি না। দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে জঙ্গিরা অনলাইনে সক্রিয়। তবে কেউ তাদের পোস্ট দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছে এমন কোনো তথ্য নেই।

তিনি আরো বলেন, আমরা মন্দিরগুলোকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় এনেছি। এ ছাড়া ঢাকা শহরের বড় মন্দিরগুলোয় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সিসিটিভি কন্ট্রোল রুম করা হবে। ছোট মন্দিরগুলোয় পুলিশের মোবাইল টিম কাজ করছে।

করোনা মহামারির কারণে উৎসবসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পরিহার করে সাত্ত্বিক পূজায় সীমাবদ্ধ রাখতে ভক্তদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে পূজা উদযাপন পরিষদ। এ ছাড়া মেলা, আলোকসজ্জা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আরতি প্রতিযোগিতা, বিজয়া দশমীর দিন শোভাযাত্রা পরিহার করে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে।

ঢাকেশ্বরী পূজামণ্ডপে ভক্তদের মাঝে আমাদের প্রতিবেদক আনজুমান আরা শিল্পী

ঢাকেশ্বরী মন্দিরে অঞ্জলি শেষে পুরোহিত রঞ্জিত চক্রবর্তী বলেন, ‘আমরা যেন একটি সুন্দর প্রভাতে আবার সবাই একত্রিত হতে পারি, আমরা যেন আবার সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারি। সবাই যেন ভালো থাকে। তিনি বলেন, উৎসবে মায়ের কাছে প্রার্থণা একটা অসুর শক্তি বিনাশকারী দেবী দুর্গা সবাইকে বিপদ থেকে মুক্তি দিবেন।’

ওমেন্স নিউজ ডেস্ক/