৫ হাজার ৩৭০ জনের প্রাণ গেছে সড়কে, প্রতিদিন গড়ে মৃত্যু ১৫

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক

জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পাওয়া তথ্য বলছে, প্রতিদিন ৫ হাজার ৩৭০ জনের প্রাণ গেছে সড়কে, প্রতিদিন গড়ে মৃত্যু ১৫য় নিহত হন ১৫ জন। পুরো বছরে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৭ হাজার ৫১২এবং এসব দুর্ঘটনায় ক্ষতি হয়েছে ৩২ হাজার কোটি টাকা। চলতি বছর বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ হাজার ৩৭০ জন নিহত হন। আহত হন ৭০ হাজার ২২২ জন। এতে গড়ে আহত হয়েছেন প্রতিদিন ১৯৬ জন।

২০১৭ সালে নৌ দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতর সংখ্যা বস থাকলেও ২০২১ সালে এসে ৭১২ টি নৌপথ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৮৮ জন এবং আহত হয়েছেন ৪৬৬ জন। রেলপথ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৭৮ জন এবং নিহত হয়েছেন ১৩৮ জন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে আকাশ-সড়ক-রেল ও নৌপথ দুর্ঘটনামুক্ত রাখার লক্ষ্যে স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন সেভ দ্য রোড'র সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান এমপি। লিখিত প্রতিবেদন পাঠ করেন সংগঠনের মহাসচিব শান্তা ফারজানা। সভাপতিত্ব করেন সেভ দ্য রোড'রর চেয়ারম্যান  জেড এম কামরুল আনাম।

প্রতিষ্ঠাতা মোমিন মেহেদীর সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন জাতীয় শ্রমিক লীগ সাভার আঞ্চলিক শাখার সভাপতি শওকত হোসেন, পাথরঘাটা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতিমা পারভীন, সেভ দ্য রোড'র ভাইস চেয়ারম্যান বিকাশ রায়, ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের  সহ-সভাপতি আনজুমান আরা শিল্পী, অনলাইন প্রেস ইউনিটির ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব রানা, সুনামগঞ্জ সভাপতি আহমদ আল কবির চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহিদুল ইসলাম, শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সদস্য ওয়াজেদ রানা, নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি মোখলেসুর রহমান তোতা, সজিব কায়েস, সড়কপথ দুর্ঘটনায় আহত সুলতানা রাত্রী, ঢাকা ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা, এ্যাড. ফখরুল ইসলাম, গাইবান্ধা শাখার সমন্বয়কারী আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

এসময় লিখিত বক্তব্যে সেভ দ্য রোড মহাসচিব শান্তা ফারজানা আরো উল্লেখ করেন, ৭ হাজার ৫১২ টি সড়কপথ দুর্ঘটনায় আমরা যে স্বজন-প্রিয়জনদেরকে হারিয়েছি চলতি বছরে; তাদের জন্য দোয়া-প্রার্থনা ও শ্রদ্ধাঞ্জলীর পাশাপাশি সরকার-বীমা ও মালিক শ্রেণির কাছে একটা দাবি বরাবরের মত আজো জানাচ্ছে সেভ দ্য রোড। আর তা হলো- পথ দুর্ঘটনায় আহতদেরকে ৩ লাখ ও নিহতদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যাতে করে অপূরণীয় এই ক্ষতি কিছুটা হলেও সামলে নিতে পারে স্বজন-প্রিয়জন হারানো পরিবারটি। একই সাথে ঘুরে দাঁড়াতে পারে আহত ব্যক্তিটি ও তার পরিবার।

এ বছরের সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫ হাজার ৩৭০ জনের মধ্যে আমরা ৪২ জন চালক, ৪ জন চালকের সহযোগী, ৪৭২ জন নারী, ১৭৭ জন শিশু,  ১৭৭ জন শিক্ষার্থী, ০৭ জন সাংবাদিক, ১১ জন চিকিৎসক, ১৮ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর সদস্য, ২৭ জন রাজনৈতিক নেতাও হারিয়েছি।

গণমাধ্যম থেকে তথ্য নিয়ে দেখেছি- সংগঠিত দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৩৩ শতাংশ বাস, ৩৭.৫৫ শতাংশ মোটরসাইকেল ১২.২৫ শতাংশ ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান, লরি, ৫.৮২ শতাংশ কার-মাইক্রো, ৩.১২ শতাংশ অটোরিক্সা, ২.৭৮ শতাংশ নছিমন-করিমন ও ৫.৪৮ শতাংশ ব্যাটারি রিকশা ও ইজিবাইক এসব দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল। সংগঠিত দুর্ঘটনার ৪৪ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৩০ শতাংশ পথচারীকে গাড়ি চাপা দেয়ার ঘটনা, ২০ শতাংশ সড়কপথের বেহাল দশার কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনায় ও ৬ শতাংশ অনান্য অজ্ঞাত কারনে দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে।

সেভ দ্য রোডের সংবাদ সম্মেলনের একাংশ

ওমেন্স নিউজ ডেস্ক/