শাহলা আহমেদের কবিতা ‘আলোবতী’

শাহলা আহমেদ

     আলোবতী

রোজকারের মত আজও
রাতের সাজসজ্জায় বসে পরে।
গাঢ় লিপষ্টিক, চোখে কাজল
গাল দুটোয় রুজ বুলিয়ে নেয়,
পরিপাটি করে শাড়ী টা জড়িয়ে নেয়।

খোঁপায় গুঁজে বেলিফুল কখনো লম্বা
বেনীতে মালা গড়ে জড়িয়ে নেয়।
সারা অঙ্গে বিদেশী সুগন্ধী-—
সবই উপহার উপঢৌকন!

আয়নায় খুটিয়ে খুটিয়ে দেখে নিজকে।
রাতের আঁধারে কারোর কাছে
আলোবতী, কারোর কাছে উর্বশী—
ম্লান হাসি ফোটে ঠোঁটের ফাঁকে।

রাতের ব্যস্ততা আর দিনগুলো ওর
একা ও বিষন্নতায় কেটে যায়।
ওই আয়নাটাই তার সঙ্গী,
অনর্গল কথা বলে যায়—
মুখে কৃত্রিম হাসি নিয়ে অভিনয়
করে চলে।
কাঁদতে ভুলে গেছে—-

নিস্পাপ শান্তশিষ্ট লাজুক মেয়েটি
মিথ্যা ভালোবাসার প্রলোভনে পরে
আজ এই নরকে…..!
পুরুষ জাতির প্রতি তার প্রচণ্ড ঘৃনা
অথচ রাত কাটে তাদেরই সাথে

এলোমেলো ভাবনায় মনটা অস্থির,

একসময়ের সুন্দরী বেলাবাই আজ
ঘরের একটা কোনায় পড়ে আছে
অসুখে বিসুখে জীর্ণশীর্ণ শরীর!

প্রয়োজন ফুরিয়েছে, সেই রূপ নেই
বেলাবাইর—
কেউ ফিরেও তাকায় না
দয়া বশে কেউ কেউ দাক্ষিণ্য দিয়ে যায়!

দিনের আলোয় সমাজের চোখে
ওরা অচ্ছুত—
অথচ রাতের আঁধারে ওদেরই সঙ্গ চায়!

নানান রকমের মিথ্যে বুলি আওরায়
বিয়ে করে ঘরে তুলবে!
সমাজের অজুহাত দেয় অথচ সমাজের
নাকের ডগায় কুকীর্তি করে বেড়ায়—

অজানা ভয়ে শিউরে উঠে—
একটা সময় তারও দিন ফুরিয়ে যাবে
বেলাবাই এর মতন—তারপর!
তারপর কি হবে ওর?

কবি পরিচিতি: শাহলা আহমেদ একজন প্রবাসী কবি। দেশের বাইরে থেকেও নিয়মিত গল্প, কবিতা, স্মৃতিকথা, ভ্রমণ কাহিনী লিখে চলেছেন। এবারের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে তার প্রথম কবিতার বই ‘স্বপ্ন বুনন’।

ওমেন্স নিউজ/