যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের একটি স্কুলে মঙ্গলবার (২৪ মে) ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে সশস্ত্র এক বন্দুকধারী। তার গুলিতে ১৯ শিশুসহ কমপক্ষে একুশ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে বাকি দুজন ওই শিশুদের শিক্ষক বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ হামলায় আহত হয়েছে আরও বেশ কয়েকজন। তাদের মধ্যে ৬৬ বছর বয়সী এক নারী এবং ১০ বছরের এক শিশুর অবস্থা গুরুতর।
টেক্সাসের গভর্নর জানিয়েছেন, সন্দেহভাজন হামলাকারীর বয়স ১৮ বছর। তার হাতে একটি বন্দুক ও এআর-১৫ রাইফেল ছিল বলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিশ্চিত করেছে। ধারণা করা হচ্ছে-সন্দেহভাজন ওই বন্দুকধারী পুলিশের পাল্টা গুলিতে নিহত হয়েছে। তবে সে কেন এই হামলা চালিয়েছে সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি স্থানীয় পুলিশ।
মঙ্গলবারের হামলায় যেসব শিশু মারা গেছে তাদের বয়স সাত থেকে দশ বছরের মধ্যে এবং তারা দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ গ্রেডের শিক্ষার্থী ছিলো। নিহত দুই শিক্ষকের মধ্যে যার পরিচয় পাওয়া গেছে,তার নাম ইভা মিরেলেস। তিনি স্কুলটির চতুর্থ গ্রেডের শিক্ষক।
দক্ষিণ টেক্সাসের যে স্কুলে এ ঘটনা ঘটেছে সেটি একটি প্রাইমারি স্কুল। দেশটিতে বন্দুক সহিংসতা নিয়ে ক্রমবর্ধমান আলোচনার মধ্যেই এ ঘটনা ঘটলো। স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঘটনাটি ঘটে এবং তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, ওই কিশোর একাই ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
ওই স্কুলে পাঁচশোর মতো শিক্ষার্থী আছে এবং হামলার পর স্কুলের অন্য শিক্ষার্থীদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে। যদিও স্থানীয় হাসপাতালগুলো বলছে যে স্কুল থেকে আনা কিছু শিক্ষার্থীকে জরুরি চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ইয়ুভালডে মেমোরিয়াল হাসপাতাল ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জানিয়েছে যে, অ্যাম্বুলেন্স ও বাসে করে ১৩ শিক্ষার্থীকে সেখানে নেয়া হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই মর্মান্তিক ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে নিহতদের প্রতি শোক জানাতে শনিবার দেশটির পতাকা অর্ধনমিত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।
হোয়াইট হাউজে দেয়া বক্তৃতায় তিনি হামলার বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, নির্বিচার গুলির এসব ঘটনায় তিনি হতাশ ও ক্লান্ত। এ ধরনের ঘটনা রুখতে তিনি আবারও বন্দুক নিয়ন্ত্রণের জন্য আহবান জানিয়েছেন।
শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনসহ দেশটির প্রায় সব পর্যায়ের রাজনীতিকরাই। এ ধরনের ঘটনা এড়াতে একটি গ্রহণযোগ্য বন্দুক নীতিমালা প্রণয়নের আহবান জানিয়েছেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিস।
বিবিসি ও রয়টার্স অবলম্বনে
ওমেন্স নিউজ ডেস্ক/