হোমায়রা হুমা
আজকের এই দ্বিধাবিভক্ত তিক্ত সময়ে নিজ মননকে নিরপেক্ষতার স্বচ্ছ আয়নায় পরখ করতে পারেন কে?
মুক্তমনা একটি অর্থবোধক স্বয়ংসম্পূর্ণ শক্তিমান শব্দ যা ব্যক্তির একক বা গোষ্ঠীর অসাম্প্রদায়িক চিন্তা চেতনা ও ধারণার বিশালতাকে প্রকাশ করে। এই শব্দটি প্রায়শই এমন একক ব্যক্তি বা কোনো এক জনগোষ্ঠীকে নির্দেশ করে যারা প্রতিক্রিয়াশীল নয়, যারা মানুষের প্রাপ্য সাংবিধানিক ও মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠা, মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে নির্দ্বিধায় বিশ্বাস করে ও সমর্থন করে এবং সরকারকে জবাবদিহি করার ক্ষমতা রাখে। এদের আরেক নাম সুশীল সমাজ। তারা মুক্ত স্বাধীন মননে সকল প্রগতিশীল কর্ম, বক্তব্য, অগ্রবর্তী কর্মসূচীকে সৃজনশীল বলে সমর্থন দিয়ে এগিয়ে চলার পথকে গতিশীল হতে সাহায্য করেন। মুক্তমনারা সাধারণত রক্তচক্ষু বা শক্তশব্দ বা চিকণ বাক্যবাণে স্বাধীন পথকে আটকে দেন না এবং প্রতিপক্ষের রক্তকোষকেও ভয় পান না।
কিন্তু প্রশ্ন হলো আসলেও কি মুক্তমনা বলে বিবেচিত বিশিষ্ট দল বা গোষ্ঠী বা ব্যক্তির নিজস্ব অনুভূতি বা চিন্তা,দৃষ্টিভঙ্গি, বিবেচনা, মনোভাব, আচরণ, উচ্চারণ সবসময় নিরপেক্ষ? তাদের অবদমন মননের চিন্তার বিশালতা, চেতনার ধারা উপধারা সবসময় অসাম্প্রদায়িক? আসলেই কি মুক্তমনারা সহজ কথা সহজে মেনে নিতে পারেন? তারা কি সকল স্বাধীনচেতা, মুক্তবুদ্ধি চর্চাকারীদের জন্য সমান? এহেন বিশাল চেতনার মানুষগুলো আপামর দেশপ্রেমিক জনগণ বা নিজের আশপাশের সাথীদেরকে আপন চিন্তকদলভুক্ত বলে মনে করেন কি? তারা সকলের মুক্ত চিন্তা বা কথা বলার স্বাধীনতা, তাদের মুক্তিবুদ্ধির চর্চাকে গ্রহণ করতে পারেন? সম্মান করেন? করার মানসিকতা রাখেন?
আজকের সময়ে রাজনৈতিক সভায় নেতারা তার সমর্থকদের শ্লোগান থামাতে গিয়ে ধমক দিচ্ছেন ইচ্ছেমত, বিরক্তির ছাপ চোখেমুখে স্পষ্ট। এরা কার পক্ষে, কারা তার পক্ষে? এমন দুঃখময় দৃশ্য সর্বদাই প্রকটমান। ইনারাও কিন্তু সমাজ বদলের বুলি আওড়িয়ে ক্ষমতায় যেতে চান। এরা নিজেকে যুক্তিবাদ ও মুক্তিবাদী প্রচার করেন।
না, মুক্তমনাদের অনেকেরই নিজেদেরই দৃষ্টিভঙ্গি সমান নয়। মুক্তমনাদের মধ্যেও মতের পার্থক্য প্রকট । তাদের মধ্যে কখন কে কার, কোন্ কথা, কোন্ আচরণ, কোন্ বিষয়কে খোলামেলা সহজ সাবলীল ভাবছেন, মেনে নিচ্ছেন বা সমর্থন দিচ্ছেন অথবা মনেমনে বা প্রকাশ্যে বিরোধ করছেন তাও বুঝে ওঠা কঠিন নয়। কেননা মুক্তমনারাও প্রকটভাবে আত্মকেন্দ্রীক । তারা সকলের জন্য সহজ নাও হতে পারেন, সকলের কথা সহজে বুঝতে চানও না। তাদের অভিধানে গ্রথিত বা গৃহিত ধারণার বাহিরে কাউকে তারা আপনমনা ভাবতে পারেন না। এই মুক্তমনারাও হতে পারেন কঠিনভাবে সাম্প্রদায়িক। হয়তো তারা যাদেরকে বা যেবিষয়কে নিজের পক্ষ বলে মনে করেন তাদেরকেই সমর্থন দেন, পাশে সাথে নিয়ে চলতে সাচ্ছ্বন্দ মনে করেন, অবলীলায় কথা বলেন। একই মতের হলেও বাকি সবাইকে অযুত সময় পাশে ফেলে রাখেন। তাদের ভিন্ন মতকে মানতে চান না। পৃষ্ঠা উল্টে দেখেনও না । ব্যক্তিকেন্দ্রীক সমর্থনে নিজ সিদ্ধান্তে মুক্তমনাদের এককেন্দ্রিক করে ফেলেন।
সাম্প্রদায়িকতা কেবল ধর্মতে আবর্তিত নয়। যে যাকে বা যে বিষয়টিকে একবার সঠিক বলে মনে করেন, সমর্থন দেন, আপন ভেবে জড়িয়ে নেয়, তাতেই বিশ্বাস করেন, তাকে ব্যতীত আর কিছুই তার কাছে গ্রহণযোগ্য নয় ; সময় বদলে গেলেও কখনো চোখ খুলে দেখতে চায় না। মোট কথা যা একপেশে, এক চোখা-সেটাই সাম্প্রদায়িক।
আমরা সবসময় মনে করি নারী নির্যাতন ও নিগ্রহের ঘটনাগুলো সম্পর্কে কেন সংসদের নারী আসন থেকে জোড়ালো প্রতিবাদ আসে না। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে সংসদীয় পদগুলো দলভিত্তিক। তারা দলের নীতির কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। দলের সমর্থনের বাহিরে একটি উচ্চারণে তার সাংসদ পদ হুমকির মুখোমুখি হতে পারে, বাতিল হয়ে যাতে পারে। জনগণের চেয়ে দল বড় এদের কাছে। তাই তারা নিশ্চুপ। এটাও সাম্প্রদায়িক।
ইদানিংকালে মুক্তমনা প্রগতিশীলরা প্রতিবাদী জবাবদিহিতামূলক বিবৃতি দেন না। আন্দোলন হয় না। এখন রাজপথ রাজনৈতিক দলের দখলে। ঘটনার ভয়াবহতা নারীদের জীবনকে অতিষ্ঠ করে দিচ্ছে, বিভিন্ন মতামতে জনগণ দিকভ্রান্ত। প্রগতিশীলরা মনে করতে পারেন বিবৃতি দিলেই কি সব বদলে যাবে? তাহলে আর বিবৃতি দেয়া কেন? আন্দোলন করলেই কি সব মেনে নিবে সরকার বা বিরোধী মনস্ক জনগণ? কিন্তু প্রামাণিত সত্য যে যুগে যুগে প্রতিবাদের ভাষাই বৃটিশ, পাকিস্তান, স্বৈরাচারকে ঠেকিয়েছে, হটিয়েছে। কিন্তু কেন যেন প্রগতিশীলরা প্রতিবাদের শাণিত অস্ত্র ফেলে পরিণতি মেনে নেয়ার দলে গিয়ে দাঁড়িয়ে গেছেন। তারা ভাবছেন দেখি না কি হয়!
এই সেদিন কলেজের এক ছাত্রী সুচিত্রা সেনের মত হাতকাটা ব্লাউজ পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছেলেবন্ধুকে দিয়ে কার্জনহলে দিনের ঝরঝরে আলোতে ছবি তুলতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় শিক্ষকদের কর্তৃক বুলিং নিগৃহের শিকার হলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অশালীন উচ্চারণে তাদেরকে যেভাবে নাজেহাল করেছেন তার জবাবদিহি করার কেউ ছিল না, কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বলে কি তিনারা সব প্রশ্নের উর্ধ্বে? নরসিংদীর রেলস্টেশনের ঘটনায়ও নারী সরাসরি নিগৃহীত হলো। এমনি কত সংবাদ, সচিত্র রিপোর্ট আজ সরাসরি প্রচার হচ্ছে; অথচ রাজপথ পত্রিকার পৃষ্ঠায় সরকারের জবাবদিহিতার দৃশ্য শূণ্য।
তসলিমা নাসরিনের প্রতিবাদী লেখা পেলাম ফেইসবুকে ও আরো কয়েকজন কলাম লেখকরা পত্রিকায় লিখেছেন। কিন্তু মুক্তমনা শতশত নারী লেখক, সংগঠক, ব্যাক্তি বা গোষ্ঠীরা নিশ্চুপ। নারী সংগঠনগুলোর আভ্যন্তরীণ কোনো কোনো সভায় কথা হলেও তা প্রর্যাপ্ত নয়। শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য ছাড়া কারো বিবৃতি বা কলাম লেখা দেখিনি। নারীর পোশাক নিয়ে কথা বলার বিপরীতে গঠনমূলক লেখা কি লেখা যেত না? আপনারা যদি না-ই লিখবেন তাহলে সমাজের রন্ধ্রের নারী বিদ্বেষী মানসপটকে বদলাবেন কীভাবে? পত্রিকাওয়ালারাও উৎসুক ছিল প্রগতিশীলরা লিখবেন, লিখে লিখে ফেইসবুক আর পত্রিকা ভরে দিবেন। নারী বিষয়ে লেখা তো সবাই পড়ে। পরিবার ও সমাজের মানসচেতনা পাল্টানোর দায় আপনাদের মতো আর কার আছে? আপনারা তো মুক্তমনার সম্মান, চেয়ার, ও মাইক সহজেই পেয়ে যান প্রতিটি মঞ্চেই। এটিই তো সবলতার পরিচয়।
কিন্তু মনে হচ্ছে কি এক অদৃশ্য কারণে প্রগতিশীলরা প্রতিক্রিয়াশীলদের কাছে হেরে যাচ্ছেন। মৌলবাদের চেতনা বহাল রইল। আজকাল কেন প্রতিবাদী কলম আর ধারালো যুক্তির নখর কেঁটে ফেলেছেন মুক্তমনারা ?আজকাল তারা নিজেদের শক্তির মহত্ত্বকে ভুলে গেছেন কেন? প্রগতিবাদীরা কি ভুলে গেছেন 'নারী উন্নয়ন নীতি' কোথায়, কার হাতে বন্দি? ঐ রক্ষণশীলস্থান থেকে কীভাবে এর মুক্তি হবে? সিডও সনদের সংরক্ষিত ধারার কথা না হয় বাদই রাখলাম।
গতকাল আমার সাংবাদিক ছোটভাই মেরাজ মিজুর একটি পোষ্ট দেখলাম ছবিসহ। কয়েকটি সাইনবোর্ড প্রতিটিতে টিকচিহ্ন দেয়া–
" এই পথে মসজিদ,
মহিলাদের প্রবেশ নিষেধ" ; আরেকটি এমন যে, "এই মাঠে গরু ছাগল মহিলাদের প্রবেশ নিষেধ" আরো আছে— আচ্ছা বলুন ঐ এলাকায় কি প্রগতিশীল জনগণ নেই? পুরুষরা নামাজ পড়তে গিয়ে এমন বোর্ড দেখে কোনো সংস্কৃতিমনা সংগঠনের নেতাদের বিবেক নাড়া দেয়নি? কেন প্রতিবাদ হলো না, কেন সাইনবোর্ড খোলা হলো না? কে কাকে জিগ্গাসিবে? এহেন প্রতিবাদহীন তারা থাকলেন কেন? কীভাবে? চুপমাইসিল ক্যাপসুল খেয়েছেন সবাই?
ইদানীংকালে পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্রের উদাসিনতায় ও অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার, পরিবারের অসচ্ছলতার ফলে পরিবারে আত্মহননের মাত্রা বেড়েই যাচ্ছে। পরিবারের মা সন্তানসহ, বাবা-মা সন্তান গোটা পরিবার,বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেলের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যেও এমন প্রবণতা বেড়েই চলছে। এমনতর গোটাপরিবারের ভিতরে নৃশংস হত্যাকাণ্ডও বাড়ছে। কি হৃদয়বিদারক ঘটনা, আহ্!
পরিবার সমাজ ও ব্যক্তিজীবনের এহেন অধঃপতিত ঘটনার প্রতিবাদে সুশীল মুক্তমনারা সরকারকে জবাবদিহি করে কোনো বিবৃতি দিয়েছেন কি, মানসচেতনা থেকে আত্মহনন থেকে মুক্ত হওয়া বিষয়ে মনঃচিকিৎসক কোনো উচ্চবাচ্য করেন নি কেন ?
বাল্যবিবাহ, কিশোর অপরাধ, ফেইসবুক ব্লগাররা নারী নিয়ে অশ্লীল বর্ণনায় সয়লাব তবু মুক্তমনা সুশীল সমাজ নিশ্চুপ। সরকারকে জবাবদিহি করবে কে? বিবৃতি দিলেই সব সমাধান হবে তা নয়, তবু প্রতিবাদ হবে তো! প্রতিবাদ তো থেমে যাওয়ার কথা নয়।
আগামী শিক্ষাবর্ষে স্কুলে পরীক্ষা থাকবে না তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত। এই দীর্ঘসময় শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা কি করবে? শিক্ষামান, বুদ্ধি চর্চা বাড়বে কিভাবে? শিক্ষকদের হাতে নম্বর প্রদানের ক্ষমতা। এখন স্কুলগুলোতে নম্বরের জন্য শিক্ষক তোয়াজ শুরু হবে নিশ্চিত। কিন্তু এই দীর্ঘসময়ে স্কুলের রুটিনে গানের ক্লাস, লাইব্রেরী ক্লাস ও ড্রিল ক্লাস, কারিগরী সিলেবাসের কিছু অংশ অন্তর্ভুক্ত করা যেত। এসব বিষয়ে সরকারের সাথে নেগোশিয়েশন, গ্রুপিং করা যেত। কিন্তু আমাদের মুক্তমনা সুশীল সমাজ এ বিষয় নিয়ে ভাবছেনই না। সরকারের সাথে কোনো মতবিনিময়ও লবিংও করেন নি। কেন?
শিল্পসংস্কৃতির কি অবস্থা! শিল্পী নিয়ে যারা নাড়াচাড়া করেন তাদের বিরুদ্ধে দুদুকের মামলা। এদের দিয়ে কি শিল্পসংস্কৃতির প্রচার প্রসার হবে? আশ্চর্যকথা যে, মামলা হলেও চেয়ার তাদের ঠিকই বহাল আছে। বেতন নিচ্ছেন, অফিস করছেন। কি সেলুকাস!
প্রত্যন্ত পার্বত্য অঞ্চলে সংস্কৃতির কি উন্নতি হয়েছে এই জনবান্ধব সরকারের সময়ে। দ্রব্যমূল্য ও নারী নির্যাতন বিরোধী কয়টি পথনাটক করতে পেরেছে এরা? শিশুদেরকে সংস্কৃতিবান্ধব করা সম্ভব হয়েছে কি? আমরা কোথায় আছি? বিটিভিতে বিষয়হীন নাটক প্রচার হয়েই যাচ্ছে। পুরানো গান নতুন শিল্পী ( এরাও পুরানো হয়ে গেছে) গেয়েই যাচ্ছে, নতুন কাহিনী, গান, সুরহীন গণমাধ্যম। কোথাও কেউ দেখার নেই। সংস্কৃতি ছাড়া মনন ও চেতনের বিপ্লব কি করে ঘটবে? সরকারকে এ বিষয়ে সজাগ কে করবে? মুক্তমনা ব্যক্তি দল ও গোষ্ঠীর দায় এখানে কতটুকু কখনো ভেবেছেন কি? সংস্কৃতিবানেরাও নিশ্চুপ। কেন?
সাধারণেরা সব সময় অসাধারণের দিকে তাকিয়ে থাকে। প্রতিবাদ করা তো দুর্বলের কাজ না। নিষ্পষিত নারীরা চেয়ে থাকে প্রতিবাদ করার প্লাটফর্মের বক্তৃতা শোনার জন্য। বক্তারা মঞ্চে দাঁড়িয়ে তাদের জন্য তাদেরই মনের কথাগুলো বলবেন। কোথায় কি?
সুশীল সমাজের বক্তারা আজকাল ফেইসবুকে শুনেন পড়েন যে, "আপনাকে কেউ বকা দিলেও আপনি চুপ থাকুন, আপনাকে গালি দিচ্ছে আপনি চুপ থাকুন, আপনার হক দিচ্ছে না আপনি চুপ থাকুন, চুপ আপনার মনে শক্তি যোগাবে– যে শক্তি আপনার কোনো ব্যক্তিগত কাজে আসবে না। প্রার্থনায় এ শক্তি ব্যয় করে বৃহত্তর আধ্যাত্মিক শক্তি অর্জন করুন।" চুপ থাকার মহার্ঘ বার্তায় আমরা গোটা সমাজ চুপ। নিজেরা চুপ থাকার প্র্যাকটিস করছি, ব্যক্তি ও দলগতভাবে চুপ করিয়ে দিচ্ছি। চুপ, চুপ, দেখো ভগবান দেখছেন, পাপ হবে, যা করার তিনিই করবেন;
শুনুন,
মুক্তমনা সৃজনশীল সংস্কৃতিবান প্রগতিশীল মানসিকতার মানুষদেরকে তো পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্র সমাজের মূল্যবান বিবেক বলে মনে করেন। তাদের মতামতকে গ্রাহ্য করে থাকেন। কোথাও কিছু ঘটলেই সেই বিষয়ে বিচলিত আতংকিতরা সেই সম্পর্কে প্রগতিশীল ব্যক্তিত্বদের মতামত জানতে চায়। মুক্তচিন্তক জনগণ নেতানেত্রীর মতামতের সাথে নিজের মতকে যাচাই করে নিজেকে সঠিক পথের পথিক বলে সান্তনা পায়। সরকারের কাছেও মুক্তমনাদের সঠিক আলোচনা ও সমালোচনা দিক নির্দেশনা গ্রহণযোগ্য। কিন্তু বেশ কয়েক বছর যাবত জনগণ মাননীয় প্রগতিশীলদের নীরবতাকে প্রত্যক্ষ করছে। কেন তারা চুপ হয়ে গেলেন?
সাংবাদিকরাও পূর্বের মত মুক্তমনাদের মতামত জানতে তাদের দ্বারস্থ হচ্ছে না। আগে দেখেছি দেশে উলটপালট কিছু হলেই সাংবাদিকরা সবার আগে কবি সুফিয়া কামালের মতামত সংগ্রহ করতেন,জাহানারা ইমামের কাছে যেতেন। এমন সঠিক ইতিহাস জানা সাহসী স্বাধীনচেতা বলিষ্ঠ নেতৃত্বের বিশাল উত্তরসুরী কে? আপামর জনগণের শুভচিন্তক স্বাধীনচেতা মুক্তিবুদ্ধির নেতৃত্বের শূণ্যতা দৃশ্যমান। সাহসী চেতনাসমৃদ্ধ প্রগতির পতাকা বহন করবে কে?
আমরা এখন ভয়ংকরভাবে চিন্তার সীমাবদ্ধতায় নিমজ্জিত। মুক্ত চিন্তাশক্তির সুশীতল বাতায়নকে খাঁচাবন্দি করে আসলে দিনেদিনে আমরা স..বা..ই নিজস্ব চেতনে মননে ভয়ংকরভাবে কনজারভেটিভ হয়ে যাচ্ছি, হয়েই গেছি….।
হুমায়রা হুম: কবি, লেখক ও মানবাধিকার কর্মী।
ওমেন্স নিউজ ডেস্ক/