তৃতীয় মেয়াদে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং

শি জিনপিং

রেকর্ড গড়ে টানা তৃতীয় বারের মতো চীনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন শি জিনপিং। শুক্রবার নতুন করে আবারও পাঁচ বছরের জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট পদে শি-কে নির্বাচিত করে চীনের পার্লামেন্ট। এর মধ্য দিয়ে মাও জেডংয়ের পর চীনের সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা হলেন ৬৯ বছর বয়সি শি। সেই সঙ্গে আজীবন ক্ষমতায় থাকার দৌড়ে নিজের যাত্রা ধরে রাখলেন চীনের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর এই নেতা। খবর- আলজাজিরার।

আগে থেকেই ধারণা করা হয়েছিলো শি-ই হচ্ছেন চীনের প্রেসিডেন্ট। কারণ ২০২২ সালের অক্টোবরে চায়না কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) কংগ্রেসে পুনরায় পাঁচ বছরের জন্য দলটির সর্বোচ্চ ফোরাম পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটির (পিএসসি) প্রধান হন শি জিনপিং। আর চীনের সংবিধান অনুযায়ী পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রধানই দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তাই শুক্রবার (১০ মার্চ) শুধু আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট হিসাবে নাম ঘোষণা করা হয়েছে শি-র। এর আগে ২০১৮ সালে শি প্রেসিডেন্টের মেয়াদের বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করেন। আগের নিয়ম অনুযায়ী দুই মেয়াদের বেশি চীনে একজন ব্যক্তির প্রেসিডেন্ট থাকার বিধান ছিল না। তাই শি চাইলে তার বাকি জীবন পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট থাকতে পারেন। ধারণা করা হচ্ছে সে পথেই হাঁটছেন তিনি। শুক্রবার ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস (এনপিসি) নামে পরিচিত চীনের তিন হাজার সদস্যের পার্লামেন্ট সর্বসম্মতিক্রমে শি-কে প্রেসিডেন্ট হিসাবে পুনঃনির্বাচিত করে। দুই মেয়াদের বেশি প্রেসিডেন্ট থাকার বিধান প্রত্যাহার করায় এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে শি-র বিপক্ষে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন না। তিন হাজার সদস্যের মধ্যে এনপিসির ২,৯৫২ জন এক ঘণ্টাব্যাপী এই নির্বাচনে শি-কে ভোট দেন। কেউ চীনের প্রেসিডেন্টের বিপক্ষে ভোট দেননি। যদিও ওইসব সদস্যই ক্ষমতাসীন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নিযুক্ত।

এছাড়া পার্লামেন্টের সভাপতি হিসাবে ঝাও লেজি (৬৬) ও নতুন ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে হান ঝেং (৬৮) কে নির্বাচন করা হয়েছে। এ দুজনই শি-এর পছন্দের ও পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটিতে ছিলেন। আগামী দুদিনে মন্ত্রিসভায় খালি হয়ে যাওয়া পদগুলোতে নিয়োগ পাবেন শি-এর পছন্দের প্রার্থীরা। যেখানে থাকছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং। সোমবার বার্ষিক পার্লামেন্টারি অধিবেশনে বক্তব্য রাখবেন শি। যেখানে করোনাভাইরাসে জর্জরিত অর্থনীতি থেকে ঘুরে দাঁড়ানো, পশ্চিমাদের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক, তাইওয়ান ইস্যু, দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে কথা বলতে পারেন তিনি। শি সর্বসম্মতভাবে দুই মিলিয়ন সদস্যের চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির কমান্ডারও মনোনীত হয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চীনা রাজনীতির বিশেষজ্ঞ ওয়েন-টি সাং বলেছেন, চীনের রাজনীতি বিজয়ী হওয়ার যুগে প্রসারিত হয়েছে। শি জিনপিং-ই সবচেয়ে বড় বিজয়ী।

এদিকে শি জিনপিংকে অভিনন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ক্রেমলিনের দেওয়া এক বিবৃতিতে পুতিন বলেছেন, প্রিয় বন্ধু অনুগ্রহ করে আন্তরিক অভিনন্দন গ্রহণ করুন। আমাদের দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার ও কৌশলগত সহযোগিতার জন্য আপনার ব্যক্তিগত অবদানকে রাশিয়া অত্যন্ত মূল্যায়ন করে।

উল্লেখ্য, ইউক্রেনে চলমান রাশিয়ার আগ্রাসনে চীনের সমর্থন আছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সেই সঙ্গে চীন রাশিয়াকে অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করছে বলেও আন্তর্জাতিক মহলে প্রচলিত। যদিও চীন তা অস্বীকার করে আসছে। ২০১২ সাল থেকে চীনের ক্ষমতায় আছেন শি জিনপিং। তার শাসনামল নিয়ে নানা সমালোচনা থাকলেও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ এখন চীন।

ওমেন্স নিউজ ডেস্ক/

লাইক, কমেন্টস, শেয়ার দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন