যেভাবে ৩৫ নারীর জীবন বদলাচ্ছেন কলেজ শিক্ষার্থী রহিমা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

সফল এই গল্পটি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পূর্ব সারডুবী গ্রামের রহিমা খাতুনের। রহিমা সারডুবী এলাকার আহাম্মদ আলীর মেয়ে এবং সরকারী আলিমুদ্দিন কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পাঁচ বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে রহিমা চতুর্থ।

নিজে স্বাবলম্বী হবেন, বদলাবেন অন্যদের। এমন চিন্তা রহিমার অনেক দিনের। কি করা যায়- এমন ভাবনা থেকে শিক্ষার্থী রহিমা ২০২১ সালে বাংলাদেশ রুরাল ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিআরডিবি‘র ৪৫ দিনের বুটিক ও এমব্রয়ডারীর প্রশিক্ষন নেন। দেশ তখন করোনাকাল কাটিয়ে উঠছে। প্রশিক্ষণের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে কিছুদিন এককভাবে শুরু করলেন যাত্রা। এসময় আশার আলো দেখতে পান মধ্যবিত্ত পরিবারের অদম্য এই শিক্ষার্থী রহিমা। পরে তার ছোট বোন হালিমাসহ এলাকার নারীদের কাছে নিজের কাজ তুলে ধরেন। বুটিক, বাটিক এ্যামব্রডারি কাজে সম্পৃক্ত করলেন বেশ কিছু নারীদের। ধীরে ধীরে সহকর্মীর সংখ্যা বাড়ে। এখন তার সঙ্গে কাজ করছেন এলাকার ৩৫ জন নারী।

এলাকার নারী ও মেয়েদের নিয়ে সুঁই সুতায় শাড়ি, থ্রি-পিস বা অন্যান্য পোশাকে সুন্দর কারুকাজ করেন। ফেসবুকে নিজস্ব পেজ খোলেন। সেখানে হাতের কাজ করা পোশাকের ছবি পোষ্ট করেন এবং ছড়িয়ে দেন সবার মাঝে। সেই পেজ আর তার বাড়ি থেকে খুব কম দামে পোশাক কিনেন মেয়েরা যেটা যার পছন্দ। এরপর রহিমা ফেসবুক পেজের গ্রাহকদের পছন্দ করা পোশাক কুরিয়ার করে পাঠিয়ে দেন দূর দূরান্তে।

এলাকার নারীদের স্বপ্নদ্রষ্টা তরুণী রহিমা জানায়, সরকারি বা বেসরকারি সহায়তা পেলে নিজেদের তৈরি করা পোশাকের শোরুম দিতে পারতেন। পাশাপাশি তার কাজের সহযোগী হিসেবে অন্য মেয়ে ও নারীদের যুক্ত করে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে পারবেন।

বড়খাতা ইউনিয়নের ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য হামিদা বেগম বলেন, রহিমা উপজেলা পরিষদে এমব্রয়ডারী প্রশিক্ষন নিয়ে এলাকার মহিলাদের সাথে কাজ করছে যা সত্যি সবাইকে অনুপ্রাণিত করছে। রহিমাকে সরকারিভাবে সাহায্য করলে তিনি এলাকার নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অবদান রাখতে পারবেন বলেও মনে করেন তিনি।

হাতীবান্ধা উপজেলার ইউএনও নাজির হোসেন জানান, রহিমার বিষয়টি তার নজরে আসেনি। এ রকম উদ্যেমী নারীদের সফলতার অংশীদার হতে চায় তার প্রশাসন। বুটিক, বাটিকের মত কাজ করা নারীদের সহোযোগিতা করা সহজ। সমাজসেবা, বিআরডিবি সহ বেশ কিছু সরকারি সংস্থা এসব বিষয় নিয়ে কাজ করে। বিভিন্ন ব্যাংক থেকেও সহোযোগিতা করা হয়।

তিনি আরও বলেন, আমার সাথে যোগাযোগ করলে এসব দপ্তর থেকে সব রকম সহোযোগিতা করা হবে। সুদমুক্ত বা স্বল্প সুদের ঋণ দেয়া হবে। কারিগরি প্রশিক্ষণও দেয়া হবে।

ওমেন্স নিউজ ডেস্ক/