ভাঙছে ট্রাম্প-মেলানিয়ার সংসার!

সিনেমা বা খেলার জগতের তারকাদের ঘর ভাঙার খবর তো হরহামেসাই শোনা যায়। তাই বলে কোনও প্রেসিডেন্টের ঘর ভাঙার খবর, তাও আবার দুনিয়ার প্রবল পরিক্রমশালী মার্কিন প্রেসিডেন্টের! আমি এ ব্যাপারে নিশ্চিত যে, এর আগে আর কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্টের ঘর ভাঙার খবর শোনা যায়নি।

কিন্তু অনেক বিষয়ের মতো এ ব্যাপারেও রেকর্ড করতে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শোনা যাচ্ছে, তার দাম্পত্য জীবনে নাকি ফাটল ধরেছে। তার সঙ্গে আর থাকতে চাইছেন না তৃতীয় স্ত্রী মেলানিয়া। তিনি ট্রাম্পকে ছেড়ে যেতে সুযোগের অপেক্ষায় আছেন। প্রেসিডেন্ট পদে ট্রাম্পের মেয়াদ শেষ হলেই নাকি ডিভোর্সের আবেদন করবেন মেলানিয়া।

এমনটাই দাবি করেছেন ট্রাম্পের সাবেক রাজনৈতিক সহযোগী ওমারোসা এম নিউম্যান। তার এই দাবি সত্যি হলে ট্রাম্পই হবেন বিয়ে ভেঙে যাওয়া প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সূত্র: আইবি টাইমসডটকম

ট্রাম্পের প্রাক্তন রাজনৈতিক সহযোগী ওমারোসা এম নিউম্যান ‘Unhinged: An InsiderÕs Account of the Trump White House’ শিরোনামে যে বই লিখেছেন, সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাম্পত্য জীবনের নানা চাঞ্চল্যকর বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।

নিউম্যানের দাবি, মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাম্পত্য জীবন মোটেই সুখের নয়। এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চান ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া। কিন্তু তিনি ভালো করেই জানেন, যতদিন ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদে আছেন ততদিন তার পক্ষে এই বিয়ে ভেঙে দেওয়া সম্ভব নয়। তাই প্রেসিডেন্ট পদে ট্রাম্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার অপেক্ষায় আছেন তিনি।

ওমারোসা এম নিউম্যান লিখেছেন, কেননা ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদে থাকাকালীন মেলানিয়া ডিভোর্স চাইলে বিপদে পড়ে যেতে পারেন। তখন যে কোনও অজুহাতে ট্রাম্প তাকে শাস্তি দিতে পারেন।

এ নিয়ে নিউম্যানের অভিমত, ‘আমার মনে হয়, মেলানিয়া সঠিক মুহূর্ত খুঁজছেন। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে যাওয়ার পরপরই তিনি তাকে তালাক দেবেন।’

ট্রাম্পকে ছেড়ে যেতে মেলানিয়ার কিসের ভয়, সে কথাও বইটিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

লেখিকা নিউম্যান বলেন, মেলানিয়া কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী নাগরিকত্ব পেয়েছেন তা মার্কিন প্রেসিডেন্টের অজানা নয়। এখন মেলানিয়া বিবাহ বিচ্ছেদ চাইলে সেই অস্ত্রই প্রয়োগ করতে পারেন ট্রাম্প। যদিও কী কারণে আমেরিকার ফার্স্ট লেডি ডিভোর্স চাইছেন, সে বিষয়ে ওই বইতে খোলসা করে কিছু বলা হয়নি।

তবে নিউম্যানের আনা এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন মেলানিয়া। মার্কিন ফার্স্ট লেডির দাবি, নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্যই নিউম্যান তার বইতে এসব অবাস্তব ও মনগড়া কথা লিখেছেন।

মার্কিন ফার্স্ট লেডির মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, নিউম্যান হোয়াইট হাউজের কর্মী ছিলেন ঠিকই কিন্তু ট্রাম্পের সঙ্গে তার তেমন দেখা সাক্ষাৎ ছিল না। তাই ট্রাম্প দম্পতির দাম্পত্য জীবন নিয়ে তিনি নিজের বইয়ে যে সমস্ত কথা লিখেছেন, তার পুরোটাই আষাঢ়ে গল্প।

তবে এবারই প্রথম নয়। বিভিন্ন সময়ে ট্রাম্প দম্পতির অশান্তির নানা খবর মার্কিন সংবাদ মাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে। এর আগে ২০১৯ ও ২০১৮ সালেও ট্রাম্প-মেলেনিয়ার ছাড়াছাড়ি হওয়ার সম্ভবনা নিয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছিল। তবে ছাড়াছাড়ি না হলেও ট্রাম্পের সঙ্গে মেলানিয়া যে সুখে নেই তা ঠিকই অনুমান করা যায়।

প্রসঙ্গত, মেলানিয়া ট্রাম্পের জন্ম যুগোস্লাভিয়ায়, ১৯৭০ সালের ২৬ এপ্রিল। ট্রাম্পের স্ত্রী হওয়ার আগে তিনি মডেল হিসাবে কাজ করতেন। ১৯৯৬-এ নিউইর্য়ক আসার দু বছর পর একটি ফ্যাশন শোতে ডোনাল্ড ট্রাম্প এর সঙ্গে মেলানিয়ার দেখা হয়। তখন ট্রাম্প বিবাহিত ছিলেন। তবে দ্বিতীয় স্ত্রী মার্লা ম্যাপলসের কাছ থেকে আলাদা থাকতেন। প্রথম দেখাতেই সুন্দরী মেলানিয়ার প্রেমে পড়েন ট্রাম্প এবং তাকে পটাতে যাবতীয় কৌশল প্রয়োগ করেন। শেষে ট্রাম্পের ছলাকলার কাছে হার মানেন মেলানিয়া এবং ওই ধণাঢ্য ব্যবসায়ীর সঙ্গে প্রণয়ে জড়িয়ে পড়েন। নানা ঘাত-প্রতিঘাতের পর ২০০৫ সালে মেলানিয়া ও ট্রাম্প বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

সূত্র: আইবি টাইমসডটকম

ওমেন্স জার্নাল নিউজ/