দমকল কর্মী পারভিন: আগুন নেভানোই যার কাজ

আসলে ছেলেদের কাজ আর মেয়েদের কাজ বলে কিছু নেই। সব কাজই সবাই করতে পারেন। প্রয়োজন কেবল সদ্দিচ্ছা আর প্রচেষ্টা। শাজিয়া পারভিনকেই দেখুন না,  একজন দমকল কর্মী। তার বাড়ি পাঞ্জাবের ভেহারি জেলায়। তিনি পাকিস্তানের প্রথম নারী দমকল কর্মী।

তিনি ২০১০ সালে দেশটির ইমার্জেন্সি সার্ভিস ১১২২ বিভাগে যোগ দেন। এর পর থেকে এ পর্যন্ত অনেকগুলো উদ্ধার ও আগুন নেভানোর কাজে অংশ নিয়েছেন। ভয়াবহ বিপদ থেকে রক্ষা করেছেন লোকজনকে।

পারভিন মনে করেন, এটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। সারাদিন ঠিকঠাক মতো সব কাজ শেষ হলে তবেই তিনি শান্তিতে ঘরে ফিরতে পারেন। এসময় মনের মধ্যে একটা দারুণ তৃপ্তি কাজ করে।

তিনি স্বেচ্ছায় এই ঝুঁকিপূর্ণ পেশা বেছে নিয়েছেন। ৩২ বছর বয়সী এই নারী সংযুক্ত আর অমিরাতের সংবাদ মাধ্যম গালফ নিউজকে বলেন, ‘সাধারণতা মেয়েরা শিক্ষক, চিকিৎসক নার্স বা অফিসে বসে করা যায় এমন সব কাজে যোগ দিতে চায়। কিন্তু নিয়মের বাইরে গিয়ে তিনি দমকল বাহিনীতে যোগ দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তিনি ভাগ্যবান যে, তার বাবা তার ইচ্ছায় বাধ সাধেননি। বরং মেয়েকে সব রকমের সহযোগিতা করেছেন।

পারভিন এই চাকরি করার পাশাপাশি মাস্টার্স পড়ছেন। তিনি মনে করেন,পাকিস্তানি নারীরা খুব প্রতিভাময়ী। একই সঙ্গে তারা শারীরিকভাবেও খুব শক্তিশালী হয়ে থাকে। তাই তাদের ট্রাডিশনাল জবের  পাশাপাশি এসব ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় যোগ দেয়া উচিত।

দেশের দমকল বিভাগে একমাত্র নারী কর্মী হিসাবে তিনি কি ধরনের সমস্যায় পড়েন। এই প্রশ্নের জবাবে পারভিন বলেন, তাকে তেমন কোনও সমস্যায় পড়তে হয় না। কেননা কর্মক্ষেত্রে বিশেষ করে মাঠে গোটা টিম তাকে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে তাদের সহকারি পরিচালক (ফায়ার) ইবরার হুসেইনের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। তিনি নিজেকে ১১২২ টিমের সদস্য হিসাবে গর্ব বোধ করেন।

তিনি মনে করেন, নার্সিং ও মেডিকেল কেয়ারের মতো নারীদের এই রিসকিউ পেশাতেও আসা উচিত।

তিনি ছয় বছর আগে দকমকল বিভাগে যোগ দেয়ার পর থেকে নানা ধরনের অভিযানে অংশ নিয়েছেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে লাহোরের থোকার নিয়াজ বেগের ঘটনাটি উল্লেযোগ্য। কেননা এখানে আগুন নেভানোর কাজে দমকল কর্মীদের তিনিই নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

বর্তমানে  তিনি লাহোরে দলের নতুন সদস্যদের দমকলের স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। পারভীন বলেন, ‘এর মধ্যে আগুন নিভিয়ে দেওয়া, উঁচু দালানগুলিতে আরোহণ করা, মানুষকে উদ্ধার করা এবং আঘাতজনিত পরিস্থিতিতে সহায়তা করা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।’

রেসকিউ ১১২২ এর অধীনে তিনটি বিভাগ  রয়েছে: রেসকিউ, ফায়ার এবং মেডিকেল উইং। এই দলের সব সদস্যরা শারীরিক ও মানসিকভাবে সম্পূর্ণ ফিট এবং তারা  আগুন নেভানো ও উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ওমেন্স নিউজ ডেস্ক/