আসামে নতুন আইন: সন্তান থাকলে বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রাখা যাবে না

বৃদ্ধাশ্রম (প্রতীকী ছবি)

প্রবীণদের সহায়তায় একটি নতুন আইন পাস করতে চলেছে ভারতের আসাম রাজ্য সরকার। ওই আইনে বলা হয়েছে-ছেলেমেয়ে থাকলে মা-বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে রাখা যাবে না। আসামে ক্রমাগত বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে এমন আইন আনতে চলেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা।

বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) এই আইনের সপক্ষে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘রাজ্যে ক্রমেই বাড়ছে বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা। এটি শুভ ইঙ্গিত নয়। ছেলেমেয়েরা যত বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকবে, ততই সংস্কার শিখবে। বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানোর সংস্কৃতি চালু হলে সমাজ ভেঙে যাবে।’

তিনি আরও বলেন, যে সব প্রবীণদের ছেলেমেয়ে নেই তারাই কেবল বৃদ্ধাশ্রমে থাকতে পারবেন। কিন্তু ছেলেমেয়ে বাইরে থেকে চাকরি করে এবং মাসে মাসে টাকা পাঠিয়ে বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে দেবে, তেমনটা আসামে চলতে দেওয়া যায় না। এ নিয়ে কড়া আইন আনা হবে।

বাবা-মায়েদের সপক্ষে এর আগেও কিছু কড়া আইন করেছে আসাম সরকার। এদের একটি হচ্ছে- যে সব সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বাবা-মায়ের দেখভাল করবেন না, তাদের বেতনের নির্দিষ্ট অংশ সরাসরি বৃদ্ধ বাবা-মায়ের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেয়া।

এদিকে বৃদ্ধাশ্রম নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এমন ঘোষণায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই এই আইনকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা বলছেন, বয়স্কদের  জোরপূর্বক বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দেওয়া, বাবা-মায়ের সম্পত্তি দখল করা কিংবা বাবা-মাকে রাস্তায় বের করে দেওয়ার ঘটনা যে ভাবে বাড়ছে— তাতে এ রকম কড়া আইনের প্রয়োজন রয়েছে।

কিন্তু রাজধানী গৌহাটির এক পুরনো বৃদ্ধাশ্রমের মালিক মনে করেন, নিঃসন্তান হলেই কেবল বৃদ্ধাশ্রমে থাকতে পারবেন, এমন আইন সঙ্গত নয়। কেননা অনেক বয়স্ক মানুষ স্বাধীন ভাবে বাঁচার জন্য স্বেচ্ছায় সন্তানের সংসার ছেড়ে বৃদ্ধাশ্রমে থাকতে পছন্দ করেন। তাছাড়া অনেকের ছেলেমেয়ে শহরের বাইরে থাকেন। ফলে তাদের পক্ষে বাড়িতে একা থাকাটা অনেক কষ্টকর হয়ে যায়। তাই আইন প্রণয়ন করে তাদেরকে জোরপূর্বক বাড়িতে রাখা অন্যায় হবে।

বিদেশি পত্রিকা অবলম্বনে

ওমেন্স নিউজ ডেস্ক/