লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, খাদ্য-পানির সংকটে বানভাসিরা

হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাট

অনবরত বৃষ্টিপাত আর উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে অবনতি হয়েছে লালমনিরহাটের বন্যা পরিস্থিতির। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে মানবেতর জীবনযাপন করছেন জেলার ৫ উপজেলার ৩০ হাজার বানভাসি মানুষ।

গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি ও আসবাবপত্র নিয়ে সরকারি রাস্তা, বাঁধ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন কিছু বানভাসি মানুষ। তবে অধিকাংশই বাড়িতে পানিবন্দি জীবনযাপন করছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নামলেও বিপদসীমার উপরে রয়েছে ধরলা।

শনিবার (১৮ জুন) বিকাল ৪টা থেকে তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং ধরলা নদীর পানি শিমুলবাড়ী পয়েন্টে বিপৎসীমার ০৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার ফলিমারী গ্রামের বানভাসি রুপা রানী (৫৬) বলেন, ‘গেল ৪ দিন ধরে রান্না করতে পারছি না। ঘরের ভেতর প্রায় হাঁটু সমান পানি। খাটের উপর কোনোরকমে বসবাস করছি। বাইরে থেকে শুকনো খাবার কিনে এনে খাচ্ছি। আমরা খুব কষ্টে আছি।’

আদিতমারী উপজেলার কুটিরপাড় গ্রামের বানভাসি আনোয়ারা বেগম (৫৫) বলেন, ‘নলকূপগুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছি না। কলাগাছের ভেলায় চড়ে চলাফেরা করছি। রান্না করতে না পারায় শুকনো খাবার খেয়ে দিন কাটাচ্ছি।’

লালমনিরহাট রাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের ৬টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে রয়েছে, এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি সহযোগিতা মেলেনি।’

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ‘বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। পানিবন্দি লোকজনের খোঁজ-খবর নিচ্ছি।’

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, বন্যাসহ যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বন্যা কবলিত পরিবারগুলোর তালিকা তৈরি করে দ্রুত খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে।

ওমেন্স নিউজ ডেস্ক/