বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হলেও দুর্ভোগে তিস্তা পাড়ের মানুষ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে পানি কমলেও ভোগান্তি কমেনি মানুষের। চরের রাস্তাঘাট ভেঙে গিয়ে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চরের নিম্নাঞ্চলে বসবাস করা পরিবারগুলো ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। এছাড়া ডুবে যাওয়া আমন ক্ষেত থেকে পানি সরে গেলেও কৃষকদের দুশ্চিন্তা কাটছে না।

রোববার (২৭ আগস্ট) বিকেল ৩টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে দেখা গেছে। এর আগে শনিবার (২৬ আগস্ট) ভোর ৬টায় পানি বিপৎসীমার ১০সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম; হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী ও সানিয়াজান সিংঙ্গীমারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি; আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, কালমাটি, পলাশী ও সদর উপজেলার রাজপুর, খুনিয়াগাছ, বাগডোরা, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। তবে এখন পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে।

চর এলাকা ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘর থেকে পানি নেমে যাচ্ছে। তবে এখনো কিছু বাড়িঘরে পানি রয়েছে। জেগে ওঠা রাস্তায় জমে আছে কাদামাটি। ফলে এখনো যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়নি। কিছু কিছু এলাকায় পানিতে ডুবে রয়েছে আমন ক্ষেত। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিস্তাপাড়ের কৃষকরা।ীবউপজেলার নিজ গুড্ডিমারি গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দুদিন থেকে পানিতে ডুবে ছিল আমন ক্ষেত। কিছু ধানগাছে পচন ধরেছে। এখন ক্ষেত নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।’

হাতীবান্ধার সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, ‘তিস্তার পানি বেড়ে ইউনিয়নের অন্তত ১০টি পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। পরিবারগুলোর তালিকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে জমা দিয়েছি। পাশাপাশি বন্যার্ত পরিবারের জন্য তিন টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। আগামীকাল তা বিতরণ করা হবে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খায়রুজ্জামান মণ্ডল বাদল বলেন, আমার ইউনিয়নের তীরবর্তী এলাকায় অনেক ঘরবাড়িতে পানি উঠেছে। এর মধ্যে কিছু কিছু এলাকায় পানি নেমে গেছে। পরিবারগুলোর শুকনা খাবারের জন্য বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। ত্রাণ সহায়তা পেলে দ্রুত বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।

হাতীবান্ধা উপজেলা প্রকল্প ও বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম বলেন, বন্যার্ত পরিবারের জন্য তিস্তা তীরবর্তী ইউনিয়নগুলোতে ২০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তা পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হবে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা বলেন, ভোর ৬টা থেকে উজান থেকে পাহাড়ি ঢল কম আসায় দ্রুত কমেছে তিস্তা নদীর পানি। এখন বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হতে শুরু করেছে।

ওমেন্স নিউজ ডেস্ক/