ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন বন্ধে মহিলা পরিষদের প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে ঢাকা মহানগর কমিটি আয়োজিত অব্যাহত নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণসহ নানা ধরনের নির্যাতন প্রতিরোধ ও প্রতিকারের দাবিতে বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি ) বিকাল ৩ টায় শাজাহানপুর, খিলগাঁও তিলপাপাড়া ও গোড়ান পাড়া কমিটির তত্ত্বাবধানে রাজধানীর খিলগাঁও অঞ্চলের রেল ক্রসিং জোড়পুকুর মাঠে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে ।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, ঢাকা মহানগর কমিটি দীর্ঘ ৫০ বছর যাবত নারীর মানবাধিকার ও নারীর সমতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বহুমাত্রিক পদ্ধতিতে কাজ করে চলেছে। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ধারাবাহিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে সংগঠনটি।

অব্যাহত নারী ও শিশুর প্রতি যৌন সহিংসতা, ধর্ষণ, মাদক ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি মাহাতাবুন নেসা। সমাবেশে বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ  এবং ঢাকা মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ,পাড়া শাখার প্রতিনিধিবৃন্দ সহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও এলাকার জনপ্রতিনিধিবৃন্দ।

স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা মহানগরের শাহজাহানপুর পাড়া শাখার সভাপতি সারা আলম বলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রয়াত সভাপতি আয়শা খানম এবং সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাখী দাশ পুরকায়স্থের প্রয়াণে আমরা মর্মাহত। এই শোককে আমরা শক্তিতে পরিণত করব। তিনি তার বক্তব্যে আরও বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন কেন আমরা বন্ধ করতে পারছি না। প্রত্যেক পরিবার থেকে সন্তানদের সামাজিক মূল্যবোধ শিক্ষা দিতে হবে। তিনি বিশ্বাস করেন এভাবে সামাজিক অস্থিরতা ও নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে পারিবারিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

ঢাকা মহানগর কমিটি লিগ্যাল এইড সম্পাদক শামীমা আফরোজ আইরিন বলেন, আজকের এই সময়ে আমরা মনে করি নারী নির্যাতন, কন্যা শিশু নির্যাতন বিরোধী সংস্কৃতি যদি গড়ে তুলতে চাই তবে অবশ্যই পরিবার থেকেই কন্যা ও ছেলে শিশুর সমঅধিকার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তাদের  বেড়ে ওঠার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। নারীরা এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি সচেতন নিজেদের কর্মদক্ষতা দিয়ে নারীরা সামাজিক ভাবে তাদের অবস্থান নিজেরাই তৈরি করেছেন। সমঅধিকার ও সমান সুযোগ নিশ্চিত হলে  নারীরাও সফলতা অর্জন করার মাধ্যমে বিভিন্ন পেশার দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। তিনি তার বক্তব্যে আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমরা লক্ষ্য করেছি সমাজে কিশোর গ্যাং তৈরি হচ্ছে, ধর্ষণ, গণধর্ষণ, সাইবার অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে তরুণ প্রজন্ম মোবাইলে আসক্ত হচ্ছে এসব কিছুই কারণে  অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই পরিবারের অভিভাবকদের উচিত সন্তানদের সাথে সময় কাটানো তাদের দিকে খেয়াল রাখা। তিনি ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়িনের শিকার নারীকে দায়ী করায় মানসিকতা পরিহার করারও আহ্বান জানান।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র অ্যাডভোকেট দীপ্তি রানী সিকদার বলেন, আমরা প্রতিদিন খবরের পত্রিকা পাতায় দেখছি নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, গণধর্ষণ, ধর্ষণের পর হত্যার পাশাপাশি সমাজের ভেতরে মূল্যবোধের অবক্ষয় পরিলিক্ষত হচ্ছে। আমরা চাই নিজস্ব পরিবার থেকে সন্তানদের সামাজিক মূল্যবোধ শিক্ষা ও নৈতিকতা শিক্ষা সম্পর্কে অবহিত করেন এবং মানবিক গুণাবলি তাদের মধ্যে জাগ্রত করুন। তিনি তরুণ প্রজন্মকে মাদক মুক্ত করে এবং নারী ও শিশু নির্যাতন নির্মূলের পদক্ষেপ নিতে যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল হবার আহ্বান জানিয়েছেন।

খিলগাঁও পুলিশ ফাঁড়ি অফিসার ইনচার্জ এস আই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সামাজিক অবক্ষয় প্রতিরোধে আমাদের অভিভাবকদের ঘর থেকে আগে খেয়াল রাখা ও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা আমাদের সন্তানদের সামাজিক অবক্ষয় ও মাদক থেকে দূরে রাখতে পারি। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ভবিষ্যতেও মহিলা পরিষদের,ঢাকা মহানগরের এ যাত্রা অব্যাহত থাকবে আশা করেন তিনি।

খিলগাঁও ১, ১১, ১২ নং ওয়ার্ড মহিলা কাউন্সিলর ফারজানা আক্তার ডলি  বলেন, সমাজ ও রাষ্ট্র হতে নারী নির্যাতন, মাদক ব্যবসা ও সামাজিক অবক্ষয় প্রতিরোধ আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে দেশ প্রেম দেশের ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার মাধ্যমে  সূক্ষ্ম অনুভূতি তৈরি করতে হবে। পারিবারিক বন্ধন সুদৃঢ় হতে হবে এবং অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন সন্তানদের মানবিক গুণাবলি বিকাশের জন্য মূল্যবোধের শিক্ষা তাদের মধ্যে জাগ্রত করুন। তিনি তার বক্তব্যে আর বলেন,  ডে -কেয়ার সেন্টার চালুর জন্য এলাকায় কেউ বাসা ভাড়া বা জায়গা দিতে চায় না, তবে অপরাধী, মাদক ও নারী ব্যবসায়ীকে ঠিকই ভাড়া দেওয়া হয়। বর্তমান সরকার আন্তরিকতার সাথে ধর্ষণ, নারী  শিশু নির্যাতন ও মাদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে দ্রুত বিচার ব্যবস্থা করছে। নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির এডভোকেসি ও লবি পরিচালক জনা গোস্বামী বলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ  দীর্ঘ ৫০ যাবত নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নারী আন্দোলন ক্ষেত্রে বহুমাত্রিক পদ্ধতিতে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সমাজে  নারী নির্যাতন,ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতা ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে মহিলা পরিষদের অভিজ্ঞতায় অনেক ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে। নারীর আজকের নিরাপত্তাহীনতায় অভাব বোধ করছে তাই অবশ্যই সরকার ও রাষ্ট্রকে দায়বদ্ধতা রয়েছে এবং সরকারকে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। মহিলা পরিষদ মনে করে নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি যতদিন পরিবর্তন না হচ্ছে, প্রচলিত গতানুগতিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন না হচ্ছে ততদনি সমাজে নারীর মানবাধিকর প্রতিষ্ঠা হবে না। সংসদে অবশ্যই নারী আন্দোলন, নারী অধিকার বিভিন্ন পরিচয়ে বিকশিত করতে হবে। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সমাজে নারীর প্রতি সহিংসতা মুক্ত সমাজ তৈরি হবে এবং আমরা নারী-পুরুষের সমতাপূর্ণ সামজ গড়ে তুলতে সক্ষম হবো। তিনি  নারী অধিকার রক্ষায় সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির লিগ্যাল এডভোকেসি ও লবি পরিচালক অ্যাড. মাকসুদা আখতার লাইলী বলেন,এই এলাকার খিলগাঁও সংগঠনের ঢাকা মহানগরের একটি পাড়া শাখা। কয়েক দিন আগেও এই এলাকায় নজিরবিহীন ভাবে একটা ঘটনা সামনে আসে। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা আমরা মনে করি মেয়েদের বিয়ে হলে তাদের আর নিরাপত্তাহীনতা থাকবে না। অথচ অনেক সময় স্বামীর সহায়তায় স্ত্রীকে ধর্ষণের শিকার হতে হচ্ছে, যা সামাজিক অবক্ষয়ের চিত্র ফুটে উঠেছে। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ও নারীর নির্যাতন প্রতিরোধে সমাজ, রাষ্ট্র ও সকল নাগরিকদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা উচিত। নারীর অর্জনকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই। নারীর অগ্রগতিতেই সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যেই এগোতে হচ্ছে নারীদের। বাংলাদেশের উত্তরণের পেছনে অনেকটাই নারীর অবদান। বাংলাদেশ যদি এ ধারা অব্যাহত রাখতে পারে তবে লিঙ্গসমতা আরও বাড়বে। নারীর প্রতি সহিংসতা বিভিন্ন অর্জনকে ম্লান করে দিচ্ছে বা বাধাগ্রস্ত করছে। সুশাসনের অভাব এর বড় একটা কারণ। সরকারকে এই দিকটায় নজর দিতে হবে। কেননা সার্বিক সুশাসন শুধু নারীর অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করবে না, উন্নয়নের জন্যও এটি অপরিহার্য। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে একসঙ্গে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেহানা ইউনুস বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে আজকে আমরা পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্রে নারীর জীবনে অভাবনীয় পরিবর্তন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে নারীর প্রতি সহিংসতা ও নারী নির্যাতন,ধর্ষণ,সামাজিক অবক্ষয়  এসব কিছু আমাদের অর্জনকে ম্লান করে দিচ্ছে বা বাধাগ্রস্ত করছে। আমরা পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্র কিন্তু এসব ঘটনার দায় এড়াতে পারি না। আমাদের অভিভাবকদের উচিত সন্তানদের সুশিক্ষা, দেশ প্রেম মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে তাঁদের মধ্যে মূল্যবোধ জাগ্রত করা। এই দেশ আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ । তাই আমাদের নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। নারী অধিকারের বাধা পিতৃতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে মাধ্যমে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। তিনি আরও বলেন, যৌন সহিংসতার শিকার নারী ও শিশুকে দোষারোপ করা বন্ধ করতে হবে। আসুন আমরা নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সামাজিক আন্দোলন ও সচেতনতা গড়ে তুলি। তরুণ প্রজন্মের কাছে এই দেশ সমাজ ও রাষ্ট্র অনেক প্রত্যাশা তাই তাঁদের বিপথে যাওয়া থেকে ফিরে আসার আহ্বান জানান।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পাদক রেখা সাহা বলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ একটি আন্দোলনমুখী গণনারী সংগঠন।দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার কাজ করে চলছে সংগঠনটি।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ দীর্ঘ কর্মপরিকল্পনা মাধ্যমে সমাজে নারীর প্রতি বৈষম্য ও সহিংসতার বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন ও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক অস্থিরতা সামাজিক অবক্ষয়, নারী ও শিশু নির্যাতন ধর্ষণ, ধর্ষণের পরবর্তী হত্যা এসব আমাদের নারী সমাজের উন্নয়নের পথ অবরুদ্ধ করছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে যে হারে ধর্ষণ, গণধর্ষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে সমাজে শিশু থেকে বৃদ্ধ নারী কেউই নিরাপদে নেই। তাই নারীর অগ্রগতি ও চলার পথকে সুগম করতে হলে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ও নারীর নির্যাতন প্রতিরোধে সবাইকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সমাজের নাগরিকদের ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই-সবাইকে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে জাগ্রত হতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি রাষ্ট্রীয় শক্তি ও সামাজিক আন্দোলনে মাধ্যমে নারীর প্রতি সংবেদনশীলতার দৃষ্টিভঙ্গী গড়ে তুলতে পারে একটি সুস্থ ও সুন্দর নারী বান্ধব সমাজ ব্যবস্থা।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক উম্মে সালমা বেগম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমরা লক্ষ্য করেছি নারী নির্যাতন শুধু অপরাধে সীমাবদ্ধ নেই, নারী নির্যাতন এখন বিনোদনের নতুন হাতিয়ার হিসেবে অপরাধী চক্র ব্যবহার করছে। সামাজিক সচেতনতার পাশাপাশি পারিবারিক সচেতনতাও বৃদ্ধি করতে হবে। আমাদের সমাজে প্রচলিত আইনে যেখানে বিচারে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে ধর্ষণের বিচার বিলম্বিত হচ্ছে যেখানে মৃত্যুদণ্ড কিভাবে হবে। ধর্ষণের বিচার প্রক্রিয়ায় আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ দীর্ঘ আন্দোলনের মাধ্যমে ক্লান্তিহীন ভাবে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে এবং পাশাপাশি সমাজের সকলকে মিলে কাজ করলে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ করা সম্ভব।নারীর প্রতি এ ধরনের সহিংসতা ও নির্মম নির্যাতনের ঘটনা দ্রুত বিচার ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করাসহ ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সরকার ও প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।

সাধারণ প্রস্তাব পাঠ করেন ঢাকা মহানগর কমিটি সহ-সাধারণ সম্পাদক মঞ্জু ধর। তিনি বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা বিরুদ্ধে পারিবারিক মূল্যবোধ গড়ে তোলার সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়িনের শিকার নারীকে দায়ী করার মানসিকতা  পরিহার করতে সামাজিক সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। ধর্ষণের শিকার নারীর প্রতি সংবেদনশীল হয়ে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে ধর্ষণের শিকার নারীর পাশে দাঁড়াতে হবে এবং তার মানসিক শক্তি বৃদ্ধি এবং চিকিৎসাসহ ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে সহায়তা করতে হবে। অভিযোগকারী যেন অনলাইনে তার অভিযোগ নিবন্ধন করতে পারে সেজন্য ওয়েবসাইট সেবা চালু করতে হবে। নারী ও কন্যার প্রতি  নির্যাতনকারীদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও প্রশাসনিক আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়া বন্ধ করতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচিতে উপস্থিত সকলকে সাধারণ প্রস্তাব পাঠের বিষয়বস্তু সম্পর্কে একাত্মতা ঘোষণা করে সমর্থন জানিয়েছে।

প্রতিবাদ সমাবেশ সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর সভাপতি মাহাতাবুন বলেন, সমাজে নারীর মানবাধিকর প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মহিলা পরিষদ নারীর  ক্ষমতায়নের অর্জনের কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে ঘরে বাইরে বিভিন্ন কর্মে নারী ও কন্যারা অব্যাহতভাবে ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ, ধর্ষণের পর হত্যা এবং যৌন নিপীড়িনের মতো সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। যা আমাদের মূল্যবোধ, নৈতিকতা ও মানবিকতার আঘাত হানে। তাই নারীর প্রতি সহিংসতা ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধে আইন শৃঙ্খলার পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা ও আন্দোলন গতিশীল করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে । নারী ও শিশু নির্যাতনের সাথে জড়িত অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির লক্ষ্যে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং নির্যাতনের শিকার নারী ও কন্যার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের দাবি জানাচ্ছি। ভবিষ্যতে নারী অধিকার রক্ষায় সবাইকে একসঙ্গে কাজ করারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

প্রতিবাদ সমাবেশে কর্মসূচিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ,ঢাকা মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ, সংগঠক, পাড়া কমিটির সম্মানিত সংগঠক-সদস্যবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ,পথচারী, এলাকার জনপ্রতিনিধিবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক ও শুভানুধ্যায়ীসহ বহু মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সকলের অংশগ্রহণে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা মধ্যে দিয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অত্যন্ত সময়োপযোগী ও কার্যকরী প্রতিবাদ সমাবেশ সফল হয়।

প্রতিবাদ সমাবেশের কর্মসূচি সঞ্চালনা করেন খালেদা ইয়াসমীন কনা ,আহ্বায়ক তিলপাপাড়া আহ্বায়ক কমিটি ও ঢাকা মহানগর কমিটি, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।

ওমেন্স নিউজ ডেস্ক/