করোনায় বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন ভারত

প্ল্যাটফর্মে রেলের অপেক্ষায় করোনায় ভীত যাত্রীরা

করোনাভাইরাস মহামারি ঠেকানোর চেষ্টায় একঘরে হয়ে পড়েছে ভারত। অন্যভাবে বলতে গেলে গোটা দেশকে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন বা অবরুদ্ধ করে ফেলেছে দেশটির সরকার।  বাতিল করা হয়েছে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বহু ফ্লাইট। এমনকি আভ্যন্তরীন রুটেও বহু ট্রেন ও বিমান বাতিল করা হয়েছে। বন্ধ হচ্ছে এক রাজ্যের সঙ্গে অন্য রাজ্যের যোগাযোগও।

ইউরোপের দেশগুলো থেকে ভারতীয় নাগরিকদেরও এখন দেশে ফেরা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, এমন কী দেশের ভেতরেও অনেকগুলো রাজ্য ভারতের অন্য প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকদের সেখানে ঢুকতে দিচ্ছে না।

ভারতে মঙ্গলবার করোনাভাইরাস সংক্রমণে তৃতীয় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১৩৭ হয়েছে।

তাজমহলসহ বিভিন্ন পর্যটককেন্দ্র, মন্দির এমনকি টাইগার সাফারিও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ভারতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত এখন মহারাষ্ট্রে, সেখানে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সন্দেহভাজন যাদের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে তাদের বাঁ হাতে স্ট্যাম্প মেরে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা হবে।

করোনাভাইরাস ঠেকানোর মরিয়া চেষ্টায় ভারত বিদেশি নাগরিকদের জন্য দেশের সীমান্ত কার্যত সিল করে দিয়েছিল গত সপ্তাহেই।

কিন্তু নতুন নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ব্রিটেন বা তুরস্ক থেকে কোনও ভারতীয় নাগরিককে নিয়েও কোনও বিমান ভারতে আসতে পারবে না।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব লাভ আগরওয়াল জানিয়েছেন, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে দুসপ্তাহ কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। আর মালয়েশিয়া, ফিলিপিন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলো, তুরস্ক ও ব্রিটেন থেকে কোনও যাত্রীই এদেশে ঢুকতে পারবেন না। সরকারের এ সিদ্ধান্ত বলবৎ হচ্ছে বুধবার (১৮ মার্চ) থেকে।

ভ্রমণ বিধিনিষেধে এই কড়াকড়ি যেহেতু ভারতীয়দের জন্যও প্রযোজ্য হবে – তাই এই মুহুর্তে ইউরোপে ও ব্রিটেনে বেড়াতে বা কাজে যাওয়া হাজার হাজার মানুষ এর ফলে মহা বিপদে পড়েছেন।

দেশের ভেতরেও বাতিল করা হয়েছে বহু ট্রেন পরিষেবা, অসংখ্য ফ্লাইট। ভারতের রেল কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবারই দেশের কতিপয় বড় বড় রুটে কমপক্ষে ৮৫টি ট্রেন বাতিল করেছে। সিকিম, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল প্রদেশ বহিরাগতদের ঢুকতেই দিচ্ছে না। দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় পর্যটক আকর্ষণ তাজমহল।

একই ভাবে দেশ জুড়ে অসংখ্য ঐতিহাসিক স্মারক কিংবা তাডোবা বা কানহার মতো সাফারি পার্কও বন্ধ হয়ে গেছে। সব জায়গাতেই বাতিল হচ্ছে সেমিনার, সভা-সমিতির আয়োজন।
পাঠানো হবে।

এদিকে বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী দেশের গোটা পরিস্থিতিকে তুলনা করেছেন আসন্ন এক 'সুনামি'র সঙ্গে।

তিনি বলেন, ‘কোভিড-নাইন্টিন ও অর্থনীতির দুর্দশা আগামী ছমাসের মধ্যে ভারতের জন্য অবর্ণনীয় কষ্ট বয়ে আনছে।’

সূত্র: বিবিসি বাংলা